সেলিম রেজা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : আবারও ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে (১৩.৩৫) মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টে (১৫.২৫) মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ১২ দিনের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে দ্বিতীয় বারের মত পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
দ্বিতীয় দফায় যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আবারও প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের ফসলি জমি। পানি উঠতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে।
সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত জানান, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি ১৩ দশমিক ৩৮ ও কাজিপুর পয়েন্টে ১৫ দশমিক ৫১ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
গত জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। জুনের শেষে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টে ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ২ জুলাই থেকে টানা ৯ দিন পানি কমার পর ১০ জুলাই থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় যমুনার অভ্যন্তরীণ চরঞ্চলগুলো দ্বিতীয় দফায় প্লাবিত হচ্ছে। আবারও বন্যা কবলিত হয়ে পড়ছে জেলার ৫টি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের মানুষ। ইতোমধ্যে বিপদদসীমা অতিক্রম করায় ভয়াবহ বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে।
সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম, রতরকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ও মেছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, কয়েকদিন আগে যমুনায় প্রথম দফা বন্যা শুরু হয়। সেই পানি নামার আগেই আবারও বাড়ছে যমুনার পানি। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় বারের মতো বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে চরঞ্চলের মানুষগুলো। ইতোমধ্যেই অনেক বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে বলে জানান এই জনপ্রতিনিধিরা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, যমুনায় পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৫ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ২১৬টি গ্রামের ৩৪ হাজার ৬৮৪টি পরিবারের এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৬০টি ঘর-বাড়ি, সাড়ে ১৬ কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধ তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যেই বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২৫ মেট্রিক টন চাল।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুল হক জানান, জেলার বন্যা কবলিত পাঁচটি উপজেলার ১১ হাজার ১৭ হেক্টর পাট, তিল ও আখসহ বিভিন্ন সব্জির ফসল পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে।
Comment here