নিজস্ব প্রতিবেদক : লাগাতার কমতে থাকা পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করেই আবার বেড়ে গেছে। রাজধানীর বাজারে একদিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ দেশি পেঁয়াজের সরবরাহে টান পড়ায় দাম এমনটা বেড়েছে।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. জুয়েল মিয়া জানান, এ বাজারে গতকাল সকালেও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা কেজি দরে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম বেড়ে ৩৬ টাকা হয়। সন্ধ্যার দিকে অনেক ব্যবসায়ী ৩৮ টাকা কেজি দরেও তা বিক্রি করেছেন। গতকাল দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হয়েছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায়। আগের দিন (বুধবার) যা ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। জুয়েল বলেন,
গত বুধবার কারওয়ানবাজার পাইকারিতে ২৮ থেকে ৩০ টাকায় পেঁয়াজ কিনেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) তা কিনতে হয়েছে ৩৩-৩৪ টাকায়। হঠাৎ কেন দাম বেড়েছে সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। পাইকাররা বলছেন, আড়তে পেঁয়াজ কম। পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনলে আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হয়। আমরা তো আর লোকসানে বেচতে পারি না।
একই বাজারের লাকশাম বাণিজ্যালয়ের কর্ণধার হাবিবুর রহমান বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীতে পেঁয়াজের ট্রাক কম এসেছে। হঠাৎ সরবরাহে টান পড়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। আমরাই পেঁয়াজের বস্তা (৪০ কেজি) কিনেছি ১ হাজার ২০০ টাকায়। ফলে এ পেঁয়াজ ৩২-৩৩ টাকার নিচে বিক্রি করা সম্ভব নয়।
বিক্রমপুর বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফয়েজ বলেন, দাম কেন বাড়ে আর কেন কমে তা আমরাও বলতে পারি না। পেঁয়াজের চালান কমলে দামও একটু চড়ে যায়। তখন বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হয় আমাদের। আজকে দেশি পেঁয়াজ কম ঢুকেছে এ বাজারে। তাই দাম কিছুটা বাড়তি।
মৌসুমে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো থাকায় রাজধানীর বাজার এখন দেশি পেঁয়াজের দখলে। বাজারে দেশি পেঁয়াজের বিক্রিই বেশি। এ ছাড়া অল্প হলেও বিক্রি হচ্ছে মিসরের পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজের দাম নাগালের মধ্যে থাকায় অন্য পেঁয়াজের কদর অনেকখানি কমে গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বর্তমানে বন্ধই রয়েছে প্রায়। এমন সময় হঠাৎ দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বাড়াটা সাময়িক। সরবরাহ ঠিক হলে দাম কমে আসবে।
রাজধানীতে পেঁয়াজের বৃহত্তম পাইকারি বাজার শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী কানাই সাহাও জানালেন সরবরাহে ঘাটতির কথা। মিতালী বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী কানাই সাহা বলেন, দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের কোনো কারসাজি নেই। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ মৌসুমে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ অনেক ভালো। তবে দুই দিন ধরে রাজধানীতে পেঁয়াজ কম আসছে। সে কারণে দাম বেড়েছে। আবার কমেও যাবে।
শ্যামবাজারের বিক্রমপুর ট্রেডার্সের ব্যবসায়ী খোকন বলেন, এ বাজারে দাম বেশি বাড়েনি। গতকাল এ বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫ থেকে ২৬ টাকাতে বিক্রি হয়েছে। ২৪ টাকাতেও বিক্রি করেছে কিছু প্রতিষ্ঠান। আজ (বৃহস্পতিবার) তা বিক্রি হয়েছে ২৬ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে। এ পেঁয়াজ খুচরায় ৩২ থেকে ৩৪ টাকার বেশি দামে বিক্রি করার কথা না। হুজুগে অনেক খুচরা ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে দেন। একজনের দেখাদেখি অন্যজনও বাড়ায়। এভাবে হঠাৎ দাম বেড়ে যায়। বাজারে এ মৌসুমে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ অনেকটাই সন্তোষজনক। সুতরাং দাম বাড়লেও তা কমে যাবে।
Comment here