এম.টুকু মাহমুদ(হরিণাকুণ্ডু)ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে ৩নং তাহেরহুদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলমের ঝন্টুর বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ওই পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাছিমা আক্তার মায়া। ঝিনাইদহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ তিনি এই মামলাটি দায়ের করেছেন । যাহার নং এনটিসি পিটিশন ৬৯/২০২০।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আল রাজি উক্ত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামানকে নির্দেশ দেন বলে জানাগেছে । মামলায় বাদী নাছিমা আক্তার মায়া জানিয়েছেন, গত ১২ ফেব্রয়ারি তিনি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। দুপুর পর সব ইউপি সদস্য ও অন্য সাধারণ মানুষ পরিষদ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান মঞ্জরুল আলম ঝন্টু তাকে কার্যালয়ের নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে প্রথমে কু-প্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এসময় ধস্তাধস্তিতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয় বলে তিনি জানান। এঘটনার প্রেক্ষিতে দায়েরকৃত মামলায় তিনি ভবানীপুর গ্রামের আল আমিন, মিন্টু মোল্লা, শরিফুলসহ ৬ জনকে স্বাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে এঘটনায় ইউপি সদস্য, মামলার স্বাক্ষী ও স্থানীয়দের মাঝে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা মামলাটিকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেছেন। এবিষয়ে মামলার স্বাক্ষী আল আমিন বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ন মিথ্যা। আমি এ ধরনের কোন ঘটনা জানি না বা আমার উপস্থিতিতে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি । একই কথা বলেন স্বাক্ষী মিন্টু মোল্লা, শরিফুলসহ অন্য সাক্ষীরা ।
উক্ত ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য ওহিদুল ইসলাম, আলমঙ্গীর হোসেন, নুর আলীসহ ৭ ইউপি সদস্য মামলাটিকে মিথ্যা দাবী করে বলেন, ওই নারী সদস্য ইতিপূর্বে আমাদের ৬ ইউপি সদস্য সহ অন্য একজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছিল । মামলায় আমরা আদালত থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে নাছিমা আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছিলাম । উক্ত ঘটনায় সে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পুনরায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আসাদুজ্জামান লিটন বলেন,ঐ দিন আমি বিকাল ৫টা পর্যন্ত পরিষদে ছিলাম। আমার জানামতে সেদিন এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের সাথে ওই নারী সদস্যের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। সে কারনে মিথ্যা মামলা করা হতে পারে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলমের সাথে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে গেছেন বলে ইউপি সদস্যরা জানান।
এদিকে থানা পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, গত ১৩ ফেব্রয়ারি এবিষয়ে নাছিমা আক্তার মায়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাজ্জাদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। স্বাক্ষীরাও ঘটনাটি জানেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জামিনুর রশিদ এবিষয়ে বলেন, ১২ ফেব্রয়ারি দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে ওই নারী সদস্য মারামারির কথা উল্লেখ করে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন সকালে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানালে আমরা তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করি।
এদিকে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাছিমা আক্তার মায়া “দৈনিক মুক্ত আওয়াজ” পত্রিকাকে জানান‚ বর্তমানে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু নিরোপেক্ষ বিচার চাই |
এবিষয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান বলেন, আমি এখনও আদালতের আদেশ হাতে পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Comment here