নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশটা হচ্ছে স্বাভাবিক বিভাগীয় গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। ১০টি বিভাগীয় শহরে যে সমাবেশ কর্মসূচি দিয়েছিলাম, তার সর্বশেষ সমাবেশটা হচ্ছে ঢাকায়। এই সমাবেশ থেকে পরিবর্তী কর্মসূচি, দাবি-দাওয়া নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন নিয়ে আমরা সামনে আসব। এটা তো চূড়ান্ত সমাবেশ নয়, চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি নয়।’
আজ বৃহস্পতিবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে গত ১৪ নভেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও ফরিদপুরে বিভাগীয় সমাবেশে বাধা প্রদান, নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন-অত্যাচার, গ্রেপ্তার, মামলা-হামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে, তাদের নেতা-মন্ত্রীরা প্রমাদ বকছে। গণভিত্তি না থাকলে যেটা হয় আর কী। প্রতি মুহূর্তে এরা নাইট মেয়ার দেখে, দুঃস্বপ্ন দেখে। এই মুহূর্তে বুঝি গেল গেল, আমার সব গেল। ওই ভয়ে ওই আতঙ্কে তারা এখন রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রকে ব্যবহার করে হুমকি দিচ্ছে আবার- ছেড়ে দেওয়া হবে না, করতে দেওয়া হবে না, দেখে নেওয়া হবে।’
ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে সরকার বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ঢাকার সমাবেশ বানচাল করতে মুন্সীগঞ্জে আমাদের নিরহ লোকজনের ওপরে হামলা চালিয়ে শহীদুল ইসলাম শাওনকে হত্যা করে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। সেই মামলায় মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান রতনকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি রফিক হাওলাদার, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আলী আকবর চুন্নুসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন থানার ৫০ জন নেতা-কর্মীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপরে হামলা চালিয়ে ৫০ জন নেতাকর্মীকে আহত করেছে। এগুলো হচ্ছে খন্ডিত চিত্র। সামগ্রিকভাবে এমন একটা আবহাওয়া তৈরি করছে ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে যেন মনে হচ্ছে যে, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় একটা যুদ্ধ হবে। এটা সরকার তৈরি করছে।’
হেফাজতের পরিণতি হবে বিএনপি- ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এ রকম বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই একটা জিনিসই উনারা (সরকার) পারে, অভ্যস্ত আর কি। সেই অবস্থা এখন আর নেই। হেফাজতের সময়ে যেটা করেছেন এখন জনগণের সঙ্গে সেটা তারা করতে পারবেন না। জনগণ তাদের জায়গায় দাঁড়িয়ে গেছে এবং জনগণ যেকোনো মূল্যে এবার তাদের দাবি আদায় করে ছাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘এইটুকু নিশ্চয়তা আপনাদের দিতে পারি, আমরা এমন কোনো কর্মসূচি নেব না যে- কর্মসূচিতে জনগণের কষ্ট হবে বা জনগণ বিপদগ্রস্থ হবে, ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমরা জনগণকে নিয়ে জনগণের দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলন করছি শান্তিপূর্ণভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে যাব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকালকে একটা পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে যে, শেয়ার মার্কেট…। দুর্ভাগ্যক্রমে সাকিবের (সাকিব হাসান) নামটাও উঠে এসেছে। একেবারে সেলফ সারপ্রাইজ, আমি জানতাম না। সেটাও এসেছে যে, এসব শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে অনেক বড় বড় রথি-মহারথিরা যুক্ত হয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংক তো শেষ। বার বার সেট্রাল ব্যাংক ঘোষণা দিচ্ছে যে, না ব্যাংকে এখন কোনো তারল্য সংকট নেই। না থাকলে এই স্টেটম্যান্ট দিতে হবে কেন? মানুষ ভয় পাচ্ছে কেন? মানুষ আশঙ্কা করছে কেন? কারণ দেশের অর্থনীতির অবস্থা এমন জায়গায় চলে গেছে যে, মানুষ এখন আর ব্যাংকে টাকা রাখতেও সাহস পাচ্ছে না, যে ওখান থেকেও তার টাকা চুরি হয়ে যেতে পারে।’
Comment here