সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৫.৫ থেকে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হবে। তবে এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, নির্দিষ্ট করে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব না। ফলে এটি একটি গুজব। এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ তাদের।
ভূমিকম্পের এ খবরকে গুজব বলে আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের তথ্য অবশ্যই গুজব। কারণ ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট করে আগাম পূর্বাভাস দেওয়ার কোনো প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়নি।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল (পলাশ) গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্প পূর্বাভাস করা যায় না। এ বিষয়ে গুজব এড়িয়ে চলুন।
তিনি বলেন, একটি নির্দিষ্ট মাত্রার ভূমিকম্প হবে ও একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হবে। এমন কোনো পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতি পৃথিবীর স্বীকৃত কোনো ভূমিকম্প বিজ্ঞানী এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারেনি। ভূমিকম্প নিয়ে মানুষের জানার সীমা এখন পর্যন্ত এই যে, কোনো স্থানে ভূমিকম্প হতে পারে ও সে স্থানে কত মানের ভূমিকম্প হওয়ার মতো স্থিতি শক্তি জমা হয়েছে। বাংলাদেশের আশপাশে ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রের সংখ্যা খুবই নগণ্য।
তবে রাজধানী ঢাকা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে বলে বিশেষজ্ঞরা নানা সময় জানিয়ে আসছেন। গত ৫ মে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকার অদূরে দোহারে হওয়ায় অনেকের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যান্য বার ভূমিকম্পের গভীরতা ৩০-৪০ কি.মি হলেও এবার ছিল ১০ কি.মি।
সেদিন এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, এটা খুবই সাধারণ ব্যাপার। বাংলাদেশ একটা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার কাছে। কিন্তু আমাদের এই এরিয়াটা একেবারে কাছে না, একটু দূরে আছে। এজন্য ভূমিকম্প হবে, ছোটখাটো ভূমিকম্প প্রায়ই হয়। ঢাকার আশপাশে এরকম তিন চার বা পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে অনেক। এরকম ছিল সকালের (৫ মে) ভূমিকম্পটা।
এসব ভূমিকম্প বিষয়ে এবার তিনি বললেন, এগুলো ছোটখাটো উৎস থেকে হয়। আমরা মনে করতে পারি এদিক দিয়ে, পদ্মা নদীর আশপাশে। যেহেতু, পদ্মার একটা লিনিয়ার স্ট্রাকচার আছে এখানে হয়ত কোনো ফাটল আছে, এই ফল্টে বা সংযোগস্থলে হয়ত হয়েছে। এই ভূমিকম্পে আতঙ্কের কিছু নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, রিখটার স্কেলে মাত্রা বেশি এসব ভূমিকম্পে বড় ধরনের ঝুঁকি আছে ঢাকার। এজন্য আমরা সবাইকে সর্তক করছি। একইসঙ্গে ভবন তৈরির ক্ষেত্রে সকল নিয়ম মেনে ভূমিকম্প সহনীয় করে নির্মাণ করলে ঝুঁকিমুক্ত থাকা যায়।
Comment here