৯ টাকায় দিচ্ছি ৬১ টাকার গ্যাস , তারপরও আন্দোলন : প্রধানমন্ত্রী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

৯ টাকায় দিচ্ছি ৬১ টাকার গ্যাস , তারপরও আন্দোলন : প্রধানমন্ত্রী

৬১.১২ টাকায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনে গৃহস্থালী পর্যায়ে গ্রাহকের কাছে ৯.৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দাম বাড়ানোর পরও সরকার গ্যাসে ভর্তুকি দেবে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৬১ টাকায় কিনে এনে দিচ্ছি ৯টায়, তারপরও আন্দোলন। তবে আন্দোলনের একটা মজার ব্যাপার আছে, বাম-ডান মিলে গেছে।’

আজ সোমবার বিকেলে গণভবনে চীন সফরের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে আন্দোলন-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি ৬১ টাকায় কিনে এনে দিচ্ছি ৯ টাকায় তারপরেও আন্দোলন এবং এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে; বাম আর ডান মিলে গেছে। এক সুর, এইতো? খুব ভালো। আমার কথা হচ্ছে, আগামীতে জিডিপি ৮.২ ভাগ করব এবং সেখান থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আমরা সেটাকে ডাবল ডিজিটে নিয়ে যাব। এখন লোডশেডিং নেই, সবাই বেশ আরাম আয়েশেই আছে বলেই সবাই ভুলে গেছে অতীতের কথা। মাত্র আট থেকে ১০ বছর আগে কী অবস্থাটা ছিল।’

তিনি বলেন, ‘এখানে আরেকটা বিষয় আছে, আপনারা জানেন যে, ২০০৪-২০০৫ সালে মিয়ানমারের গ্যাসে ভারত, মিয়ানমার, জাপান, চীন সবাই মিলে বিনিয়োগ করেছিল। ভারত ওই গ্যাসটা নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশের মধ্যে পাইপলাইন করে। এ নিয়ে তখন একটা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি/খালেদা জিয়া সরকার ওই পাইপলাইনে গ্যাস নিতে দেয় নাই। সেখানে যদি আমি থাকতাম, আমি কি করতাম; পাইপলাইনে তো গ্যাস নিতে দিতামই। আমি আমার ভাগটা রেখে দিতাম। যে আমাকে দিয়ে তারপর নিতে হবে। আমি কিন্তু পাইপলাইনেই মিয়ানমার থেকে গ্যাস আনতে পারতাম। আর সে গ্যাস যদি আমাদের অর্থনৈতিক কাজে লাগাতে পারতাম তাহলে আমাকে হয়তো এখন এলএনজি আমদানি না করলেও চলত।’

‘দেশের কতগুলো সিদ্ধান্ত নিতে দেশের নেতৃত্ব যদি ভুল করে বা সরকার যদি ভুল করে তার খেসারত জনগণকে দিতে হয়’ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকার গ্যাসে ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘দাম বাড়ানোর পরেও বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে আমাকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তারা আন্দোলন যখন করেছে তখন আমি একটা কাজ করি, যে দামে কিনব সে দামেই বেচব। ওই ৯ টাকাটা আমরা ৬১ টাকা করে নেব।’

প্রসঙ্গত, পাঁচ দিনের সরকারি সফরে ১ জুলাই চীন যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে তিনি ২ জুলাই দালিয়ানে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি বেইজিংয়ে ৪ ও ৫ জুলাই যথাক্রমে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ও প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সেইসঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিষয়ক মন্ত্রী সং তাও প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।

চীনের এসব শীর্ষ নেতা মিয়ানমার সরকার ও দেশটির নেতাদের বুঝিয়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সাহায্য করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে বিদ্যুৎ, পানিসম্পদ, সংস্কৃতি ও পর্যটন খাতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আড়াই হাজার মেট্রিক টন চাল সরবরাহে বাংলাদেশ ও চীন নয়টি চুক্তি সই করে। বেইজিংয়ে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে সাক্ষরিত চুক্তিগুলোর মধ্যে দুটি ঋণচুক্তি রয়েছে।

Comment here