সরঞ্জাম পর্যাপ্ত না থাকলেও প্রস্তুত করোনা মোকাবিলায় - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

সরঞ্জাম পর্যাপ্ত না থাকলেও প্রস্তুত করোনা মোকাবিলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া : সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছাড়াই বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালকে বিশেষায়িত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ওই হাসপাতালে আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট), ডিজিটাল এক্সরে মেশিন নেই। এ ছাড়া রয়েছে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার ও পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট) সংকট। অথচ এসবই আইসোলেশনে থাকা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন। এ কারণে হাসপাতালটি আইসোলেশনের জন্য প্রস্তুত ঘোষণা দেওয়ার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও সন্দেহভাজন কোনো রোগীকে ভর্তি করানো হয়নি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতাল গত ২৩ মার্চ দুপুর ১টার মধ্যে খালি করা হয়। ওইদিন বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রোগীদের ছাড়পত্র ও অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৪ ও ২৫ মার্চ হাসপাতালটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দুই মিটার পরপর শয্যা বসানো হয়। সে সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের ২৬ মার্চ থেকে ভর্তি নেওয়া হবে।

আইসোলেশনে থাকা রোগীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের ৩০ সদস্যের একটি প্যানেলও করা হয়েছে। যারা পর্যায়ক্রমে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার পর সেল্ফ কোয়ারেন্টিনে যাবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রবিবার করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে দুজন রোগী ভর্তি করানো হয়েছে। তারা আইসোলেশনে আছেন। হাসপাতালে আইসোলেশনে রোগী রাখার জন্য ১২০টি শয্যা তৈরি রাখা হয়েছে এবং চিকিৎসকদের ব্যবহারের জন্য কিছু পিপিই ছাড়া আর কোনো সরঞ্জাম নেই। এ ছাড়া কোভিট-১৯ রোগী মোকাবিলার জন্য মাত্র দুজন চিকিৎসক রয়েছেন। নার্সদের কোভিট-১৯ মোকাবিলায় নেই কোনো প্রশিক্ষণ।

ওই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ড. নুরুজ্জামান সঞ্চয় জানান, কোভিট-১৯ এর জন্য এই হাসপাতালটিকে জেলার পক্ষ থেকে বিশেষায়িত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০ জনের একটি চিকিৎসা প্যানেলও রয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের কোভিট-১৯ এর প্রশিক্ষণ রয়েছে। তারাই অন্য চিকিৎসকদের শিখিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। চিকিৎসকরা কেউ যদি ৪৮ ঘণ্টা চিকিৎসা দেন, এর পর তিনি ১৪ দিনের সেল্ফ কোয়ারেন্টিনে যাবেন।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, হাসপাতালের আইসিইউ, ডিজিটাল এক্সরে মেশিনের অনেক সংকট রয়েছে। পিপিই (একবার ব্যবহারের জন্য) মাত্র ৪০০টি আছে। ওই হাসপাতালে কোভিট-১৯ এর সন্দেহভাজন কোনো রোগী এখনো ভর্তি করানো হয়নি বলে তিনি জানান।

বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শফিক আমিন কাজল জানান, হাসপাতালে ৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। এ ছাড়া ১৫২ জন সেবিকার মধ্যে কারোরই কোভিট-১৯ এর প্রশিক্ষণ নেই। কোভিট-১৯ এর জন্য ১২০ শয্যা তৈরি থাকলেও রোগীর চাপ থাকলে প্রয়োজনে আরও শয্যা বাড়ানো যাবে।

এদিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান (শজিমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ড. ওয়াদুদ জানান, ওই হাসপাতালের ১৪টি শয্যা কোভিট-১৯ এর জন্য প্রস্তুত রাখা হলেও কোভিট-১৯ এর সন্দেহভাজন রোগীদের প্রথমে মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। প্রস্তুতি হিসেবে প্যাথলজি বিভাগে ২৫ জন অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসক, সেবিকা ও টেকনিশিয়ান রয়েছেন।

Comment here