নিজস্ব প্রতিবেদক : ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে হতদরিদ্র্যের ১০ টাকা কেজির ৬৩০ বস্তা চালসহ আটক হয়েছেন উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির ভাই ও তার এক সহযোগী। এক অভিযানে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল আলম সুমন এলাকার পাঁচটি গোডাউন সিলগালা করেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নে পারুয়া গ্রামের কুশলডাঙ্গী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক দুজন হলেন আমিরুল ইসলাম (৪৫) ও পান্না কাওসার (৩০)।
আমিরুল উপজেলার পারুয়া গ্রামের কুশলডাঙ্গী বাজার এলাকার প্রয়াত ইউসুফ আলীর ছেলে। তার ভাইয়ের নাম মোমিনুল ইসলাম ভাষানি। তিনি ১০ টাকা কেজি চালের ডিলার এবং বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।
আমিরুল নিজেও ১০ টাকা কেজি চালের ডিলার। তার স্ত্রী কুলসুম আক্তার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য।
জানা গেছে, ফজরের নামাজের সময় ব্যাটাচালিত দুটি অটোভ্যান ও একটি নসিমনে করে হতদরিদ্র্যের ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কুশলডাঙ্গী বাজারে। এ সময় নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন পারুয়া গ্রামের বাসিন্দা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা যুবলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল। তিনি ওই দুটি অটোচার্জার ও একটি নসিমনকে আটক করে ৯৯৯ নম্বরে কল করে বিষয়টি জানান। এ সময় ভ্যানের দুজন চালক পালিয়ে গেলেও নসিমনচালক পান্নাকে ধরে রাখেন মুকুল।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খায়রুল আলম সুমন ঘটনাস্থলে আসেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পান্নাকে আটক ও দুটি অটোচার্জার ও নসিমন গাড়িসহ ১০ টাকা কেজির ৬৮ বস্তা চাল জব্দ করেন।
পরে সেখান থেকে পান্নার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমিরুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন ইউএনও খায়রুল আলম সুমন। সেখান থেকে গিয়ে আমিরুলের নিজস্ব মেসার্স ভাই ভাই হাস্কিং মিলের একটি গোডাউন থেকে ১০ টাকা কেজির ৫৬২ বস্তা চাল জব্দ করেন।
অভিযানের সময় আমিরুলের স্ত্রী ইউপি সদস্য কুলসুম আক্তার অন্যদের নিয়ে পালিয়ে যান।
ইউএনও খায়রুল আলম সুমন বলেন, ‘উদ্ধারকৃত ৬৩০ বস্তা চাল থানায় পাঠানো হয়েছে। ভাই ভাই হাস্কিং মিলের গোডাউনসহ আরও চারটি গোডাউন সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। মোমিনুল ইসলাম ভাষানির ভাই আমিরুলকে আটক করা হয়েছে।’
ইউএনও আরও বলেন, ‘হতদরিদ্র্যের চাল কেন মজুদ করা হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।’
বিষয়টি নিয়ে আমিরুল ও তার স্ত্রী কুলসুমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। আমিরুলেল ভাই মোমিনুল ইসলাম ভাষানি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
Comment here