নিজস্ব প্রতিবেদক : তওবার সময় যেমন চিৎকার করে কাঁদছিলেন, ফাঁসির মঞ্চে এসে চুপচাপই ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকা ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ।
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা এক মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির আগে নিয়মানুযায়ী ওজু ও গোসল করানো হয় মাজেদকে। পরে নিয়ে আসা হয় কারাগার জামে মসজিদের ইমামের সামনে। যখন তাকে তওবা পড়ানো হয়, কান্নায় ভেঙে পড়েন মাজেদ।
চিৎকার করে কান্নার এক পর্যায়ে ইমামের হাত ধরে ফেলেন বঙ্গবন্ধু হতাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত আবদুল মাজেদ। ইমামের হাত ধরে তিনি চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন। এর মাঝেই তাকে তওবা পড়ানো হয়।
ফাঁসি কার্যকরের আগে তারে ফাঁসিকাষ্ঠে নিয়ে আসার আগে নিশ্চুপ হয়ে যান মাজেদ। এমনকি ফাঁসি কার্যকরের সময়ও চুপ ছিলেন।
ফাঁসি কার্যকরের পর তার মরদেহ ৫ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয়। সিভিল সার্জন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার পর মরদেহ ফাঁসির মঞ্চ থেকে নামিয়ে নিচের দরজা থেকে বের করে আনা হয়।
মঞ্চের পাশে উপস্থিত এক কারা সংশ্লিষ্ট এসব তথ্য জানিয়েছেন। মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকার জেলার মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারা সূত্রে আরও জানা যায়, শনিবার সকাল থেকেই ফাঁসির বিষয়টি জানতেন মাজেদ। বিকেলে কনডেম সেলের দায়িত্বরত কারারক্ষীদেরকে মাজেদ তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন।
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আবদুল মাজেদেরই প্রথম ফাঁসি হলো। জল্লাদ শাহজাহান, সহকারী মনির, সিরাজসহ ১০ জনের একটি দল আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করেন। জল্লাদ শাহজাহান বঙ্গবন্ধুর অন্য পাঁচ খুনির ফাঁসিও কার্যকর করেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত মাজেদ ২৩ বছর ধরে পলাতক থাকলেও ৬ এপ্রিল মধ্যরাতে রিকশায় ঘোরাঘুরির সময় তাকে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গত বুধবার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন মাজেদ। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বৃহস্পতিবার তার আবেদন নাকচ করে দেন। ওই দিনই তার মৃত্যু পরোয়ানার ফাইল রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এই ফাইল কারা কর্তৃপক্ষের কাছেও পাঠানো হয়েছে। এরপর কারাবিধি ও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
Comment here