সারাদেশ

আকাশপথে মূল্যছাড়েও যাত্রী নেই

তাওহীদুল ইসলাম : সড়ক ও রেলপথে ভোগান্তির শঙ্কায় প্রতিবছরই ঈদযাত্রায় চাহিদা বাড়ে আকাশপথে। অনেক আগেই বিক্রি হয়ে যায় অভ্যন্তরীণ রুটের সব ফ্লাইটের টিকিট। বাড়তি যাত্রীর কারণে অতিরিক্ত ফ্লাইটও নামায় এয়ারলাইন্সগুলো। এবার তাতে ধস নেমেছে। বাদ সেধেছে বৈশ্বিক মহামারী করোনা। পরিস্থিতি বিবেচনায় টিকিটের দাম কমিয়েও যাত্রী পাচ্ছে না বাংলাদেশ বিমান, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার।

করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে গত মার্চ থেকে দেশের সাতটি অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ছিল প্রায় আড়াই মাস। বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর ১ জুন ঢাকা থেকে সিলেট, চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুরে রুটে উড়োজাহাজ চলাচল সচল হয়। ধীরে ধীরে গন্তব্যের দ্বার উন্মোচিত হয় ঢাকা থেকে যশোর, রাজশাহী ও বরিশাল রুটেরও। শুধু কক্সবাজার রুটটি এখনো বন্ধ রয়েছে। ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ সাতটি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ।

তবে করোনার কারণে রিজেন্ট ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে। সীমিত পরিসরে ঢাকা থেকে যশোর, সৈয়দপুর, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রামে ফ্লাইট চলছে ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ারের। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অনুমতি পেয়েও যাত্রী সংকটের কথা বলে এতদিন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ রেখেছিল বিমান। তবে কোরবানির ঈদের আগে আবারও ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটি। আজ শনিবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুরে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার আমাদের সময়কে বলেন, ‘প্রতিদিন এই তিন রুটের আসা যাওয়াসহ চট্টগ্রামে ছয়টি, সিলেটে ছয়টি ও সৈয়দপুরে চারটি অর্থাৎ ১৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান। মহামারী শুরুর আগের ভাড়াতেই যাত্রীরা ভ্রমণ করতে পারবেন।’

এদিকে অনুমতি পাওয়ার পর থেকে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো এসব রুটে ফ্লাইট চালিয়ে আসছে। তবে আশানুরূপ যাত্রী নেই। গত চার-পাঁচ বছর ধরে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মাসখানেক আগেই বিক্রি হয়ে যেত সুপার সেভার বা ইকোনমি প্রোমো ক্লাসের কম দামের টিকিটগুলো। ১৫ দিন আগেই বিভিন্ন গন্তব্যের ফ্লাইটের সব টিকিট শেষ হয়ে যেত। অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার ব্যবস্থা করত এয়ারলাইন্সগুলো। আসন্ন ঈদকে ঘিরেও এ সময়ে কোনো আসনই পাওয়ার কথা নয়। অথচ বাস্তবে প্রায় সব ফাঁকা। করোনাকালে নানা অফার আর মূল্যছাড় দিয়েও বিক্রি হচ্ছে না কাক্সিক্ষত টিকিট।

গত বছর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ঈদ উপলক্ষে প্রায় ৪০ হাজার যাত্রী আকাশপথে ঢাকা ছাড়েন। কিন্তু এবার সেই সংখ্যা অর্ধেকেরও কম হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে ঈদের আগে সাধারণত যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল রুটে যাত্রীর সংখ্যা বেশি থাকত। এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। আগের তুলনায় ফ্লাইট কম। সব ক্লাসের আসন ফাঁকা রয়েছে। অথচ এ সময়ে এমনটি হওয়ার কথা নয়।’

জানা গেছে, এবারের ঈদ উপলক্ষে ২৯ জুলাইয়ের (ঈদের দুদিন আগে) টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চাহিদা ৩০ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য। আর বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ৬, ৭ ও ৮ আগস্টে ঢাকায় ফেরার টিকিটের চাহিদা বেশি।

Comment here

Facebook Share