কিছুই বলা যাচ্ছে না, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রসঙ্গে ফখরুল - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

কিছুই বলা যাচ্ছে না, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রসঙ্গে ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখনো ঝুঁকিমুক্ত নন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে সব সিদ্ধান্ত সরকারের। এ ব্যাপারে এখনো কিছুই বলা যাচ্ছে না।

আজ রোববার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার রোগমুক্তির জন্য আল্লাহতায়ালার কাছে দোয়া প্রার্থণা করা হয়েছে, দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি কোভিড নেগেটিভ হয়েছেন। তার যে সমস্ত সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছিল, ক্রমান্বয়ে সেগুলো উন্নতির দিকে আসছে। মূল সমস্যাগুলো যেগুলো আছে- দীর্ঘকাল ধরে অনেকগুলো অসুখে ভুগছেন, দীর্ঘকাল কারাভোগের কারণে সেই অসুখগুলো বেড়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বয়সের কারণে বেশ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেডিকেল বোর্ড অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে, উদ্বেগের সঙ্গে তার চিকিৎসা করছেন। তবে আশার কথা তার প্রোগ্রেস হচ্ছে।’

খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। সারা দেশের সকল মানুষ, রাজনৈতিক দলগুলো উদ্বিগ্ন। অথচ এই সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী অত্যন্ত আপত্তিকর, বিদ্রুপাত্মক কথা বলছেন। এটা কখনোই শোভনীয় নয়। তাদের এতটুকু মানবতাবোধ, কৃতজ্ঞতাবোধ, সৌজন্যবোধ নেই। অনুরোধ করবো দয়া করে শালীনতা বজায় রেখে, রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বজায় রেখে কথা বলবেন। আজকের দিনই শেষ দিন নয়, মনে রাখবেন।’

এ সময় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘করোনা, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে অনেক মারাত্মক একটা রোগ। করোনার পরে অরগানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই জন্য চিকিৎসকরা আন্তরিকতার সঙ্গে তার চিকিৎসা করছেন। খালেদা জিয়া এখন পর্যন্ত ঝুঁকির বাইরে নন।’

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন করার প্রক্রিয়া কোন পর্যায়ে আছে, তাকে কোন দেশে নেওয়া হতে পারে- এই প্রশ্নের উত্তরে খফরুল বলেন, ‘বিষয়টা পুরোপুরিভাবে নির্ভর করবে সরকারের সিদ্ধান্তের পরে। সরকারের সিদ্ধান্তের আগে কোনোটাই কিছু প্রসিড করা সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া শুধু বিএনপি চেয়ারপাসন নন। তিনি গণতন্ত্রের প্রতীক। প্রত্যেকটি মানুষই এই মুহূর্তে তার রোগমুক্তি চান। দেশনেত্রী নিজেও দোয়া চেয়েছেন যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন। আপনারা সবাই পবিত্র রমজান মাসে তার রোগমুক্তির জন্য দোয়া করবেন।’

এদিকে,  দীর্ঘ ২৭ দিন পর করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার চিকিৎসায় গঠিত চিকিৎসক দলের এক সদস্য শনিবার দিবাগত রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, তিনবার খালেদা জিয়ার করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে। শেষ পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

জানা গেছে, এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার কৃত্রিম অক্সিজেন নির্ভরতা অনেকাংশে কমেছে। তবে তার কিডনিতে সামান্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা গত শুক্রবারের তুলনায় গতকাল উন্নতি হয়েছে। কিডনি সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকরা কাজ করছেন।

আগে থেকেই আর্থ্রাইটিকস, ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন খালেদা জিয়া। এর সঙ্গে নতুন করে করোনা-পরবর্তী শারীরিক জটিলতায় দলে ও পরিবারে সৃষ্টি হয়েছে নতুন উদ্বেগ। গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনা পজিটিভ হন। ২৭ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় নমুনা পরীক্ষা করা হলে এ দফায়ও তার ফল আসে পজিটিভ। এ অবস্থায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ভর্তি করা হয়। ৩ মে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

 

Comment here