২৯ রোজা হলে বুধবার ঈদ, তাই মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের ছুটি। সব মিলিয়ে আসছে সপ্তাহে এক দিন শুধু কার্যদিবস সোমবার। কর্মজীবী যারা সেদিনের ছুটি নিয়েছেন, তাদের ঈদের ছুটি কার্যত গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়েছে। দেরি না করে এদিনই তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটতে শুরু করেন বাড়ির পানে। টিকিট কেনার যুদ্ধ শেষে শুরু হয়ে গেছে নিরাপদে বাড়ি ফেরার যুদ্ধ।
বাসস্ট্যান্ড, ট্রেন স্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনাল-সর্বত্রই গতকাল সকাল থেকে দেখা গেছে বাড়িমুখো মানুষের ভিড়। চাকরিজীবীদের অনেকে এদিন কর্মস্থল থেকে একটু আগেই বেরিয়ে যান, পরিবার-পরিজন নিয়ে শামিল হন বাড়ি ফেরার যুদ্ধে।
গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকাল থেকে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ায় টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে থেমে থেমে যানজট হচ্ছে। এছাড়া মহাসড়কের বোর্ডবাজার, ভোগড়া বাইপাস মোড়ে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এই দুটি পয়েন্টে গাড়ির জটলা দেখা গেছে।
ভোগড়া বাইপাস মোড়ে একটি গাড়ি বিকল হয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে সেটি সরিয়ে নেওয়া হলে বিকেলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এখনো কারখানাগুলোতে ঈদের ছুটি শুরু হয়নি। হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, কারখানাগুলো ছুটি হলে যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে। তবে যানজট নিরসনে ও যাত্রীসেবা নিশ্চিতকরণে কাজ থাকবে হাইওয়ে পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশ, মহানগর পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে কাজ করছেন বলেও জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।
মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, চান্দনা চৌরাস্তায় পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অবৈধ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ি ও চন্দ্রায় ফ্লাইওভার দুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ায় এর সুফল পেতে শুরু করেছে সড়ক ব্যবহারকারী চালক ও যাত্রীরা।
চান্দনা চৌরাস্তা থেকে মাত্র আধ ঘণ্টায় চন্দ্রায় পৌঁছাতে পেরে খুশি যাত্রী ও চালকরা। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টাঙ্গাইলগামী যানবাহন ফ্লাইওভার ব্যবহার করে চন্দ্রা অতিক্রম করছে।
নবীনগর হয়ে ঢাকা থেকে আসা উত্তরবঙ্গগামী গাড়ি ফ্লাইওভারের নীচ দিয়ে টাঙ্গাইল অভিমুখে স্বাচ্ছন্দে যেতে পারছে। ফলে চন্দ্রা ত্রিমোড়ে আগের বছরগুলোতে যে সিগন্যালের যানজট তৈরি হতো, সেটি এখন আর নেই। এই দুটি যানজট প্রবণ এলাকায় গাড়ি চলছে স্বাভাবিক গতিতে। যদিও গাড়ির চাপ এবং ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে এই মহাসড়কে।
যানজট নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে জিএমপির এসি ট্রাফিক (নর্থ) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘যানজট নিরসনে জিমএমপি, জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ কাজ করছে। যানজট নিরসন ও ট্রাফিক শৃঙ্খলায় অধিক সংখ্যক পুলিশ বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে। এছাড়া মহাসড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা, হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ ত্রি-চাকার যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।’
এসি নজরুল আরও বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্প চলমান থাকার পরও পুলিশের গৃহিত এসব পদক্ষেপের কারণে নির্বিঘ্নে যানজট মুক্ত পরিবেশে মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। ঈদে মলমপার্টি, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম বন্ধে পুলিশ সজাগ রয়েছে। ইতিমধ্যে এ সকল পার্টির সদস্যদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা যেন ঈদের আগে জামিনে ছাড়া না পায় সেজন্য আইনগত দিকও দেখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশে ঘরমুখো মানুষকে বাড়িতে পেঁছে দিতে কাজ করছি।’
Comment here