রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নারী-শিশুসহ এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৩৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি ছয়জনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মোস্তফা আবদুল্লাহ আল নূর সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি থেকে ২৯ জনের লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘটনার পর আহতাবস্থায় বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসাদের মধ্যে ১০ জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
এর আগে গত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে নারী-শিশুসহ ৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আহত সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পরে আরও দুজনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া যায়।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন লাগা সাত তলা ভবনটির বেশিরভাগ ফ্লোরেই বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ছিল। ঘটনার সময় ওই রেস্টুরেন্টে অনেকে শিশু সন্তান, স্ত্রী ছাড়াও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খাবার খাচ্ছিলেন। নিচে আগুন লাগার পর ৭ তলা ওই ভনটিতে আটকে পড়েন অনেকে। পরে তাদের অনেকেই সাত তলার ছাদে আশ্রয় নেন। তবে রেস্টুরেন্টগুলোয় একাধিক সিলিন্ডার থাকায় দ্রুতই পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে আগুন।
এদিকে, ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে নারী-শিশুসহ ৪৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। এছাড়া কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার এবং ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে ৯টা ৫৬ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট। পরবর্তীতে ইউনিট বাড়ার পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে ৩ প্লাটুন সাধারণ আনসার ছাড়াও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১ প্লাটুন আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়।
Comment here