জনি রায়হান : আমরা তিন ভাই-বোন এক সাথে দুপুরে ভাত খাইছি। ভাত খেয়ে আমি ঘুমায়ে ছিলাম। ছোট বোন দুটা বাইরে খেলতে গেছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে। মনে হচ্ছিল যেন বস্তির ঘরগুলো সব কাঁপতেছিল। দৌঁড়ে বাইরে এসে দেখি রক্ত আর রক্ত। বাচ্চাগুলো রক্তের মধ্যে পইড়া আছে। আমার ছোট বোন ফারজানা (৬) রক্তে ভেজা। দৌঁড়ে যাইয়া তারে বুকে লইছি। এরপর দেখি আরেক বোন মরিয়ম (৮) পড়ে আছে রাস্তায়।’
এভাবেই দৈনিক মুক্ত আওয়াজঅনলাইন’র কাছে কথাগুলো বলছিলেন মিরপুরের রূপনগরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ফারজানা ও মরিয়মের বড় ভাই মো. শিহাব উদ্দিন। এই সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত হয়েছে।
মো. শিহাব উদ্দিন বলেন ‘বোনের লাশ বুকে লইয়া আমার হুশ নাই। আরও কয়েকজনের লাশ রাস্তায় পড়েছিল। কেউ কেউ জোরে জোরে কান্নাকাটি করছিল।’
শিহাব আরও বলেন, ‘মরিয়মের লাশ বুকে নিয়ে আমি ঘরে চলে আসি। আর ফারজানারে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়া গেছে। এরপর পুলিশ আইসা মরিয়মের লাশও নিয়ে গেছে। দুপুরে একসাথে ভাত খাইলাম, এখন আমার বোন নাই।’
গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণের অপর এক প্রত্যক্ষ্যদর্শী সোহানুর রহমান দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘পাশের চায়ের দোকানে আমি বসে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে বাইরে আইসা দেখি, বাচ্চারা রক্তাক্ত ছিঁটাই পইড়া আছে। কেউ মরা, কেউ জীবিত, কেউ গোঙাচ্ছে, কারও হাত-পা নাই।’
সোহানুর রহমান আরও বলেন, ‘সবার সাথে পরে আমি বাচ্চাগুলোকে উদ্ধার করি গাড়িতে, অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেই।’
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে দৈনিক মুক্ত আওয়াজঅনলাইনকে বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা পাঁচজন। তারা সবাই শিশু। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে আরও ১২ জন। অন্য কোনো হাসপাতালে কেউ আছে কি না খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
Comment here