নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের আক্রান্তের বিষয়টি সরকার এতদিন গোপন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
অবিলম্বে দেশের সব বিমানবন্দর, নৌ ও স্থলবন্দরে পর্যাপ্ত স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন, আক্রান্তদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল সুনির্দিষ্ট করাসহ জনসচেতনতা সৃষ্টির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবিও জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে অনেক কিছু পত্র-পত্রিকায় আসছে, আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে উঠছি। সারা বিশ্ব আজকে এই ভাইরাস যে একটা ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করেছে পত্র-পত্রিকা বলুন, বিভিন্ন দেশ বলুন তারা সবাই সোচ্চার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক এয়ারক্র্যাফ্ট এক দেশ থেকে আরেক দেশে প্লেন যাওয়া-আসা বন্ধ করে দিচ্ছে, মানুষ আসা বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের সরকার এই করোনাভাইরাস নিয়ে এতদিন কোনো কিছুই বলেনি এবং তারা খুঁজেও পায়নি। কী কারণে খুঁজে পায়নি জানি না। হঠাৎ করে কালকে খুঁজে পেয়েছে। এটা কী এমন যে যখন বিদেশি অতিথিরা আসতে অপরাগতা প্রকাশ করলেন তখনই এই তিনজনের নাম আসল।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি জানি না। তবে আমার ধারণা তারা পুরো জিনিসটাকে গোপন করার চেষ্টা করেছে। আমাদের এই রোগ বাংলাদেশে অনেক আগেই এসেছে বলে অনেকের ধারণা এবং সেই ধারণাগুলো সত্যিকার অর্থে এখন প্রমাণিত হতে যাচ্ছে।’
একই সঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতন সৃষ্টির দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বিষয়ে যথাযথ যেসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেই ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হয়নি। অবিলম্বে সমস্ত পোর্ট, এয়ারপোর্টসমূহে স্ক্যানিং ব্যবস্থা, নৌ বন্দর, স্থল বন্দর, এয়ারপোর্ট- সবগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা রাখা দরকার এবং এর সচেতনা মানুষের মধ্যে জাগানো দরকার।’
‘একই সঙ্গে এই রোগের ট্রিটমেন্টের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল সুনির্দিষ্ট করে দরকার যাতে করে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হতে পারেন। এটাকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়ে সরকারেরর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত’, যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেখুন কী ধরনের অশালীন কথা-বার্তা, অশোভন কথা-বার্তা। আমরা যখন দেখি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, “একটা ৪০০ টাকার মেজর একদিনের তার বাঁশির ফুঁয়ে স্বাধীনতা আসেনি।’ দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এই মেজরের বাঁশির ফুঁতেই সমগ্র জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো স্বাধীনতার জন্য। তখন আপনারা কেউ পলায়ন করছিলেন, কেউ আত্মসমর্পন করছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়গুলোকে এভাবে বলা, অন্যকে অপমান করার মধ্য দিয়ে কোনো মহত্ত্ব ফুটে উঠে না। আজকে প্রত্যেকটি মানুষের যাদের অবদান আছে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদেরকে স্বীকার করে নেওয়া উচিত ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে তারা অন্য কাউকে স্বীকার করতে চান না। না স্বীকার করতে চান এমএজি ওসমানীকে, না স্বীকার করতে চান তাজউদ্দিন সাহেবকে, না স্বীকার করতে চান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান সাহেবকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার মারুফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুসতাহিদুর রহমান, ‘দি ডেইলি ফিন্যান্সিয়াল হেরাল্ড’ এর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেসপ্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ।
Comment here