নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের জন্য ২০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ আসছে বলে জানা গেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এই প্রণোদনার ব্যবস্থা করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে এই টাকা নেওয়া হবে। কোন প্রক্রিয়ায় নেওয়া হবে এবং কোথায়, কীভাবে বিতরণ করা হবে সে বিষয়ে একটি পরিকল্পনা এরইমধ্যে চূড়ান্তের পথে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বিশ্বের দেশে দেশে প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। এদের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ২০ লাখের মতো কর্মী করোনাভাইরাসের প্রভাবে নানা সংকটে আছে। এরইমধ্যে অনেকেই খাদ্য সংকটে আছে। বিভিন্ন দূতাবাস বাংলাদেশি কর্মীদের তালিকাও নিচ্ছে। তবে যেই পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা হচ্ছে তা কর্মীদের জন্য পুরোপুরি সহায়ক নয়। এই কর্মীদের খাবার সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে এরইমধ্যে ৪ কোটি টাকার বেশি সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, নতুন সহায়তা প্যাকেজ মূলত বিদেশফেরত কর্মীদের জন্য। করোনাভাইরাসের প্রভাবে এরইমধ্যে যারা ফেরত এসেছেন এবং যারা ফেরত আসবেন, তাদের জন্য এই সহায়তা প্যাকেজ আনতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানিয়েছেন, প্রবাস থেকে ফেরত আসা কর্মীদের সাহায্যের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে। যাতে করে এই টাকা দিয়ে তারা দেশে কিছু একটা করতে পারেন। প্রথম পর্যায়ে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। এই ঋণের সুদ হবে ২ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে। শুধু তাই নয় ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে কোনো জামানত লাগবে না বলেও প্রস্তাব রাখছে মন্ত্রণালয়।
ড. সালেহীন জানান, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক পুরো বিষয়টি তদারকি করবে। তারাই ঋণ দেওয়া এবং আদায়ের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করবে। এই ব্যবস্থার স্বচ্ছতার জন্য, ঋণ গ্রহীতাকে অবশ্যই বিদেশ থেকে ফেরত আসার প্রমাণ দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘এই সহায়তা শুধু বিদেশফেরত কর্মীদের জন্য।’
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের এই ২০০ কোটি টাকার সঙ্গে শিগগিরই আরও অর্থ যুক্ত হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের এটি বড় ধরনের প্রণোদনা বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, যে সকল প্রবাসী দেশে চলে এসেছে বা আসছে, তাদের জন্য সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এ থেকে কোনো দেশই রেহাই পাচ্ছে না। বাংলাদেশের শ্রমবাজারগুলোও এখন লকডাউন চলছে। অনেক দেশ অনিয়মিত কর্মীদের ফেরত পাঠাতে চাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মীরা দেশে আসলে যাতে অসহায় হয়ে না পড়েন, সেজন্য তাদেরকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’
গেল ৫ এপ্রিল প্রবাসী ক্যলাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় কয়েকটি দেশ থেকে বাংলাদেশি কর্মী ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে কুয়েত, মালদ্বীপ, বাহরাইন এরই মধ্যে অনিয়মিত কর্মী ফেরত আনতে বলেছে বাংলাদেশকে। এমন পরিস্থিতিতে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে ফেরত আসা প্রবাসীদের জন্য অর্থ সহায়তা প্যাকেজ আনতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
Comment here