চারদিকে শুধু পানি। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর। বানের পানিতে ভেসে যাচ্ছে গৃহপালিত পশু, আসবাবপত্র। নারী-শিশুসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের চেষ্টা আর আর্তনাদ বানভাসিদের। ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও একটানা ভারী বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় এই পরিস্থিতি চলছে মৌলভীবাজার থেকে শুরু করে হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়িসহ দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ভারত সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর বিস্তীর্ণ এলাকায়। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়া ফেনীর জেলা সদরও গতকাল বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। ফেনী শহরের সবচেয়ে উঁচু এলাকা ট্রাংক রোডে বুক সমান পানি ওঠে। গতকাল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ির অনেক এলাকা। সব মিলিয়ে অন্তত ১০ জেলায় গতকাল বিকাল পর্যন্ত বন্যায় ৩৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বন্যা নিয়ে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়েছে। এতে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সব উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গত দুদিন বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হওয়ায় উপদ্রুত এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম ও সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের কিছু অংশেও পানি উঠেছে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক মিলছে না বন্যাকবলিত এলাকায়। প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না বহু মানুষ। বন্যায় বন্ধ হয়ে গেছে আখাউড়া স্থলবন্দর। প্রয়োজনের তুলনায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা : গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দেশের অন্তত ১০টি জেলাজুড়ে চলমান ভয়াবহ বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সব উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বিকালে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘কেবিনেট মিটিং হয়েছে বন্যা নিয়ে। আমি সেখানে ছিলাম। সেখানে এক্সটেনসিভ ডিসকাশন হয়েছে। সেখানে স্যার
সবাইকে বলেছেন, বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান।’
বৈঠক শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মানুষের সঙ্গে যতটা সম্ভব যোগাযোগ রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বন্যাকবলিত এলাকায় সব ‘অ্যাফোর্ড’ (সামর্থ) নিয়োজিত করেছি। আমাদের লক্ষ্য মানুষের জীবন রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। তিনি বলেন, উজান থেকে হঠাৎ করেই পানির ঢল নামে। তবে ভারত পানি ছেড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও বন্যার কারণ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বন্যা মোকাবিলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কাজে উপদেষ্টাদের দপ্তরগুলোও সমন্বয় করবে।
৩৬ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত : এদিকে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বৃষ্টির পানির প্রভাবে দেশের ১০ জেলার প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় একজন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকালের এক তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়। মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১০। সেগুলো হলোÑ কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট। এসব জেলার ৬৫ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত। এই ১০ জেলায় মোট ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গতকাল দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা জানান, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৫৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য মোট ৪৪৪টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে। দুর্গতদের জন্য নগদ ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং ১৩ হাজার ৬৫০ টন চাল ও ১১ হাজার বস্তা শুকনা খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে।
উন্নতির পূর্বাভাস : বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির কারণে গতকাল মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি ঘটেছে। বিভিন্ন আবহাওয়া সংস্থার বরাত দিয়ে আরও বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় (আজ শুক্রবার থেকে) দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাত কমে আসতে পারে। এ সময় মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই এবং ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা নদীর নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তী সময়ে উন্নতি হতে পারে। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে জানিয়ে বলা হয়, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি সমতলে কমে যেতে পারে।
জেলায় জেলায় বন্যার অবনতি : পাঁচ দিন ধরে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গতকাল এ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়। ঘরবাড়ি তলিয়ে অন্তত দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জীবন রক্ষায় তাদের হাহাকার আর আর্তনাদে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থতি সৃষ্টি হয়েছে। তাদেরকে উদ্ধার করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বিকাল থেকে জেলা শহরের সঙ্গে এ তিন উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গতকাল জেলা শহর তলিয়ে যায়। শহরের উঁচু এলাকা ট্রাংক রোডে বুকসমান পানি ওঠে। ফলে শহরের অধিকাংশ বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট। বন্যায় ফাজিলপুরে এক শিশুর মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন এসপি মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া সোনাগাজী, দাগনভূইয়াও গতকাল প্লাবিত হয়। গতকাল ফেনী শহরেও বন্যার পানি প্রবেশ করে।
সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবিসহ স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধারকাজ করছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের ফেনী অংশ তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার পানিবন্দিদের মধ্যে বয়স্ক নারী-পুরুষ, শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন। অন্যদিকে খুদেবার্তা পাঠিয়ে আটকেপড়াদের উদ্ধারে অনেকে সহযোগিতা চেয়েছেন।
কুমিল্লা জেলায়ও গতকাল বন্যার মারাত্মক অবনতি হয়। চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জে ১০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লা সদর উপজেলা, আদর্শ সদর, ব্রাহ্মণপাড়া, লাকসাম, বুড়িচং, বরুড়া, দেবিদ্বার, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রামের মুরাদনগর ও দাউদকান্দির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে নাঙ্গলকোটের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকায় বন্যাকবলিত। গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানি বিপদসীমার ১.১৩ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড় একটি অংশ তলিয়ে গেছে।
নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার সবকটিতেই বসতঘর ও সড়ক তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি ২০ লাখ মানুষ। এদের বেশিরভাগই খাবার ও বাসস্থানের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। জেলার সদর, সুবর্ণচর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর উপজেলার বেশিরভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়।
লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানান ডিসি সুরাইয়া জাহান। জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৮৯টি সাইক্লোন শেল্টারগুলোও প্রস্তুত রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বন্যার পানিতে ৩৬টি গ্রামের ৪৩০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে যায়।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, মিরসরাই, সীতাকু-, হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলা। এখানকার ২২ ইউনিয়নের প্রায় সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। মিরসরাইয়ে ৬০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট হাঁটু থেকে কোমরসমান পানিতে ডুবে গেছে। অন্য দিকে, নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, শুলকবহর, বাদুরতলা, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেট, পাঁচলাইশ, হালিশহরসহ আরও বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটে পানি ঢুকে যায়।
মৌলভীবাজারে মনু, ধলাই ও জুড়ী নদীর পানি গতকাল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ।
হবিগঞ্জের ৫ উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। জেলার খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হবিগঞ্জ সদর, চুনারুঘাট, শায়েস্তাগঞ্জ, মাধবপুর ও নবীগঞ্জ উপজেলায় অন্তত আট হাজার ২৪০টি পরিবার পানিবন্দি। বাহুবল উপজেলার করাঙ্গী তীরবর্তী প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। শায়েস্তাগঞ্জের লস্করপুরে রেলসেতু হুমকির মুখে পড়ায় গতকাল দুপুর থেকে সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কক্সবাজারে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত শতাধিক গ্রামবাসী। বিশেষ করে ঈদগাঁও, চকরিয়া-পেকুয়া আর রামুতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। রেলপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কক্সবাজারের পাশর্^বর্তী বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউনিয়নের ৮ গ্রামের চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
খাগড়াছড়িতে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলা সদরের বেশিরভাগ এলাকার মানুষ পানিবন্দি। দীঘিনালার মেরুং, বোয়ালখালি ও কবাখালি ইউনিয়নের ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রাঙামাটিতে টানা বর্ষণে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ২০টি স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে পানি থাকায় রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। কাউখালীর ইছামতি খাল ও কাউখালী খালে পানি বেড়ে ডুবে গেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০টি ঘর। বাঘাইছড়িতে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেচ প্রকল্পের ১০০ কিলোমিটার এলাকায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ওই পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সুনামগঞ্জে বন্যার আশঙ্কা নেই : বন্যা নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা নেই। অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা।
Comment here