মেয়েটির অপরাধ, ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে চাওয়া - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

মেয়েটির অপরাধ, ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে চাওয়া

গত সোমবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে সদরঘাট থানা-পুলিশ। তাঁরা হলেন অটোরিকশাচালক নিজাম উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী তানিয়া বেগম, তানিয়ার বোন সোনিয়া বেগম, সোনিয়ার স্বামী মো. লিটন, তাঁদের খালা পপি বেগম ও নানি ফিরোজা বেগম।

পুলিশ জানায়, কিশোরীর মা নেই। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎমায়ের নির্যাতন সইতে না পেরে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে চলে আসে মেয়েটি। কাজ নেয় একটি পোশাক কারখানায়। এর মধ্যে পরিচয় হয় অটোরিকশাচালক নিজামের সঙ্গে। একপর্যায়ে কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে তাকে ভাড়াবাসায় তোলেন নিজাম। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে নিজামের প্রথম স্ত্রীসহ স্বজনেরা কিশোরীর ওপর এ নির্যাতন চালান।

সদরঘাট থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, কিশোরীকে মারধর করে চুল কেটে দিয়ে মুখে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেন আসামিরা। মেয়েটির অপরাধ, ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে চাওয়া। আর ভালোবাসার মানুষটি বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বাসায় রেখে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। ঘটনার পর ভয়ে সে কাউকে জানায়নি। এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মেয়েটির কাছ থেকে সব বিষয় জানতে পারে। পরে জড়িত থাকার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

কিশোরী সাংবাদিকদের বলে, ২০১৭ সালে তার রিকশাচালক বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎমায়ের নির্যাতন সইতে না পেরে চট্টগ্রামে এক আত্মীয়ের বাসায় চলে আসে। এরপর একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। আসা–যাওয়ার পথে অটোরিকশাচালক নিজামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ১ এপ্রিল নিজাম ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী এলাকায় স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ভাড়া বাসায় রাখেন কিশোরীকে। খবর পেয়ে নিজামের প্রথম স্ত্রী তানিয়া তাঁর স্বজনদের নিয়ে ৭ এপ্রিল ওই বাসায় এসে কিশোরীকে জোর করে সদরঘাট পশ্চিম মাদারবাড়ী এলাকায় তাঁর বোন সোনিয়ার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে সবাই মিলে কিশোরীকে মারধর করে মাথার চুল কেটে দেন। ফিরোজা বেগম মেয়েটির মুখে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেন।

কিশোরী আরও জানায়, এসব ঘটনা মুঠোফোনে ধারণ করে রাখেন। পাশাপাশি সাদা কাগজে সই নেয়। পরে মেয়েটিকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। মেয়েটি তার আত্মীয়ের বাসায় ফিরে আসে।

পরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘটনায় ব্যবহৃত কাঁচি, ভিডিও ধারণ করা দুটি মুঠোফোনসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

Comment here