যুবদল নেতা ও মিরপুরের বাঙালিয়ানা ভোজের সহকারি বাবুর্চি হৃদয় মিয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল হালিম রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে এদিন সকালে আদালতে হাজির করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই হৃদয় জুমার নামাজ আদায় করে মিরপুর-১০ নম্বরে সমাবেশে যান। সেখানে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে গুলিও চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হন হৃদয়। তিনি হবিগঞ্জের মাধবপুর ১০নং হাতিয়াইন ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
এ ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন হৃদয়। মামলার ৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি ব্যারিস্টার সুমন।
ওই মামলায় গত ২১ অক্টোবর মধ্যরাতে ঢাকার মিরপুর থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন গত ২২ অক্টোবর তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিটে ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড আইডি থেকে ব্যারিস্টার সুমন লেখেন, ‘আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দো’আ করবেন সবাই।’ ওইদিন রাতে তাকে পল্লবী থানার রাখা হয়।
ব্যারিস্টার সুমন রাজধানীর আদাবর থানার রুবেল হত্যা মামলায় এবং হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি।
গার্মেন্টস কর্মী মো. রুবেল হত্যার ঘটনায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর থানায় গত ২২ আগস্ট রাতে নিহত রুবেলের পিতা রফিকুল ইসলাম এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যারিস্টার সুমন হচ্ছেন ২৯ নম্বর আসামি।
আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে ব্যারিস্টার সুমনসহ ৯৭ জনের নামে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থানায় মামলা হয়। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও পাননি সুপ্রিম কোর্টের আলোচিত এই আইনজীবী। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে পরাজিত করে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। এতে সংসদ সদস্য পদ হারান তিনি।
Comment here