নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি থেকেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। খেয়াল রাখবে লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেও না। গতকাল বুধবার ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুুর রহমান। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাও তাদের আদর্শ নিয়ে সততার সঙ্গে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে হবে। ছাত্র রাজনীতি থেকেই তো রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠে; সেটাও মাথায় রাখতে হবে। কাজেই নিজেদের নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তুলতে গেলে সেভাবেই কাজ করতে হবে। তোমরা সেভাবে নিজেদের গড়ে তুলবে আদর্শবান কর্মী হিসেবে। খেয়াল রাখবে, কোনো লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেও না। নিজেকে শক্ত করে সততার পথে থেকে এগিয়ে যাবে, সংগঠনকে শক্তিশালী করবে। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কাজ করবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করবে। সেভাবেই নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।’
ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে শিক্ষার ওপর জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগের মূলমন্ত্রই হচ্ছে শিক্ষা। প্রতিটি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এই শিক্ষা সেই শিক্ষা নয় যে, কোনোমতে পয়সা বানানোর শিক্ষা না, শিক্ষাটা অন্তর থেকে অনুধাবন করতে হবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ছাত্রলীগের আরেকটি মূলমন্ত্র হচ্ছে শান্তিÍ। কাজেই ছাত্রলীগকে সেটা মনে রাখতে হবে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি এ সমস্ত কিছু থেকে দূরে থাকতে হবে। কখনো যেন কোনো ছাত্র বা যুবসমাজ এই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, ‘করোনা একটা শিক্ষা দিয়ে গেছে মানুষকে, ধনসম্পদ কোনো কিছু কাজে লাগে না। অর্থসম্পদ কোনো কিছু কাজে লাগে না। মানুষকে যেমন হঠাৎ করে মরতে হয় আবার সম্পদ বানালেও যে সেগুলো কোনো কাজেই লাগে না, করোনা কিন্তু সেই শিক্ষা দিয়ে গেছে সবাইকে। কাজেই অহেতুক অর্থের পেছনে না ছুটে মানুষের জন্য কাজ করা একজন রাজনৈতিক নেতার কাজ। সেটাই মাথায় রাখতে হবে।’
অশিক্ষিত নেতৃত্ব একটি দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি কারো নাম বলব না। শুধু একটু বলতে চাই, অল্প শিক্ষিত বা স্বশিক্ষিত বা অশিক্ষিত নেতৃত্ব একটা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আজকে সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষিত তরুণদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান।
একটি মহল দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা তো দেশের মানুষের ভাগ্যের কথা চিন্তা করে না। কাজেই তারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকে। কিন্তু নীতি-আদর্শ নিয়ে চললে আর সৎ পথে চললে পরে যে কোনো বাধা অতিক্রম করা যায়। সেটা প্রমাণ করেছি আমরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু মানুষ সব সময়, সেই দেশ সৃষ্টির পর থেকে কোনো একটা প্রভু খুঁজে নিয়ে তাদের পদলেহন করতে ব্যস্ত থাকে। তাদের কোনো আত্মমর্যাদাবোধ নেই, তাদের নিজের প্রতি কোনো আত্মবিশ্বাস নেই। এদের দিয়ে দেশের মানুষের কল্যাণ হয় না।’
 
            


 
                                 
                                 
                                
Comment here