সুদের টানাটানিতেও বড় মুনাফা ব্যাংকগুলোর - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

সুদের টানাটানিতেও বড় মুনাফা ব্যাংকগুলোর

হারুন-অর-রশিদ : ঋণের সুদ কমানো নিয়ে বছরজুড়ে ছিল টানাটানি। ঋণ বিতরণও প্রতিমাসেই কমেছে; কিন্তু এর পর পরিচালন মুনাফা বেড়েছে অধিকাংশ ব্যাংকের। সর্বশেষ প্রাপ্ত হিসাবে ৩০ ব্যাংকের সর্বমোট পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২১ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৮ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। এই হিসাবে পরিচালন মুনাফা বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশেষ ছাড়ে বিপুল খেলাপি ঋণ নবায়ন করেছে ব্যাংকগুলো। এতে ব্যাংকগুলোর কাগুজে সুদ-আয় বেড়েছে। ফলে বার্ষিক হিসাবে পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ব্যাংকগুলোর।

পরিচালন মুনাফা ব্যাংকগুলোর প্রকৃত মুনাফা নয়। খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন, করপোরেট কর এবং অন্যান্য সঞ্চয়ন বাদ দেওয়ার পর প্রকৃত মুনাফা পাওয়া যায়। ব্যাংক খাতে বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ পরিচালন মুনাফার বেশিরভাগই খেয়ে ফেলে। গত ২০১৮ সালে পরিচালন মুনাফা হয় ২৬ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা; কিন্তু প্রকৃত মুনাফা দাঁড়ায় মাত্র ৪ হাজার ৩৯ কোটি টাকা।

গতকাল পর্যন্ত ৩০টি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা পাওয়া গেছে। বেসিক ব্যাংক লোকসান করেছে। আর ২টি ছাড়া বাকি ২৭ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের। গত বছর ছিল ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালন ১ হাজার ২ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬০ কোটি টাকা। পূবালী ব্যাংকের মুনাফা ১ হাজার ১০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংকের মুনাফা ১ হাজার ২২৯ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে ৯৫২ কোটি টাকা। অন্যদিকে ওয়ান ব্যাংকের ৫৭০ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪৩৩ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংক ১ হাজার ২০০ কোটি এবং অগ্রণী ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

মুনাফা কমার বিষয়ে ব্যাংক দুটি জানিয়েছে, মুনাফা কমার একমাত্র কারণ তারা সিঙ্গল ডিজিট বাস্তবায়ন করেছে, যার ফলে সুদ-আয় কমে গেছে। এর বাইরে ব্যাংক এশিয়ার ৯৪০ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৯০০ কোটি, দি সিটি ব্যাংকের ৮২০ কোটি, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৮০১ কোটি, এক্সিম ব্যাংকের ৭৮০ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৭৫৩ কোটি, যমুন ব্যাংকের ৭৩০ কোটি ও প্রাইম ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৭০০ কোটি টাকা।

অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ৬৮২ কোটি টাকা, আইএফআইসি ৬৭৫ কোটি, এবি ব্যাংক ৬৩০ কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক ৫৯০ কোটি, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ৬৫৩ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। নতুন প্রজন্মের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। ২০১৯ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২৬২ কোটি টাকা। আগের বছরে যা ছিল ২০৩ কোটি টাকা। ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ২৯ শতাংশ। এ ছাড়া সাউথবাংলা ২২৮ কোটি, ইউনিয়ন ২৭৫ কোটি, মেঘনা ১২৪ কোটি, এনআরবি গ্লোবাল ১৩৪ কোটি ও এনআরবি ব্যাংক ৯৩ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে।

এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল বলেন, এবি ব্যাংক অনেক ভালো করেছে। ঋণ বিতরণ আইনিসীমার মধ্যে রয়েছে। খেলাপি ঋণ আগের বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে আমাদের পরিচালন মুনাফা বাড়বে। তবে পরিচালন মুনাফা কতÑ এটি বলতে রাজি হননি তিনি।

Comment here