টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় কথিত জিনের বাদশা সেজে এক কলেজছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সত্তর বছরের বৃদ্ধ দারোগ আলী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
গত সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানির পর কথিত জিনের বাদশা পলাতক রয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে পিতৃহীন অসহায় ছাত্রীর পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষ পড়ুয়া ওই ছাত্রী কয়েকদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় পাশের বাড়ির দারোগ আলী বলেন যে, ওই ছাত্রীকে জিনে ধরেছে। জিনের বাদশা ছাড়া তাকে বাঁচানো যাবে না।
পরে ওই ব্যক্তি নিজেই জিনের বাদশা সেজে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীকে সারা শরীরে স্পর্শ করে ঝাড়-ফুঁক দিতে থাকেন। এ ছাড়া ওই ছাত্রীকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করেন।
নির্যাতনে ওই কলেজছাত্রী আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা তাকে রাত ১২টার দিকে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে রোগীর অবস্থা অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার সকালে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে তিনি বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে কথিত জিনের বাদশাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানাজানির পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
পিতৃহীন ওই কলেজছাত্রী তার মা ও এক প্রতিবন্ধী চাচাকে নিয়ে একই গ্রামে বসবাস করছেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ওই ছাত্রীর বিধবা মা বলেন, ‘জিনের বাদশার নির্যাতনে আমার মেয়ের চোখ এমন হয়েছে। আমার স্বামী নাই। আমার মেয়ের কিছু হলে আমি বিয়ে দেবো কিভাবে?’
স্থানীয়রা বলছেন, এই নির্যাতনের উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত, যাতে আর কেউ এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তির সাহস না পায়।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মেয়েটিকে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে গুরুতর অসুস্থ বানানো হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘ঘটনার কয়েকদিন পর খবর পেয়ে মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছিলাম। তারা আইনগত ব্যবস্থায় যেতে রাজি হয়নি।’
Comment here