পুরান ঢাকার ওয়ারীর বহুতল ভবনে শিশু সামিয়া আফরিন সায়মাকে (৭) ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে হারুনুর রশীদ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার ডাবরডাঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃত হারুনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। ঘটনার পর সে পলাতক ছিল। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। হারুন উক্ত ভবনের ভাড়াটিয়া খালাতো ভাই পারভেজের বাসায় থাকতো এবং পারভেজের রং এর দোকানে কাজ করত।
দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (পূর্ব) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার) এর নির্দেশনায় এবং উপ-পুলিশ কমিশনার (ওয়ারী বিভাগ) এর সার্বিক সহযোগিতায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ বশির উদ্দিন (ওয়ারী জোনাল টিম), ডিবি (পূর্ব) এর নেতৃত্বে অফিসার ও ফোর্সসহ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ওয়ারী থানা এলাকায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শিশু সামিয়াকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে হারুন।
গত শুক্রবার রাতে পৌনে আটটার দিকে ওয়ারীর বনগ্রাম মসজিদ এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনের নয় তলার ফাঁকা ফ্লাট থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। শনিবার নিহত শিশুটিকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে ময়নাতদন্তের পর এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগ।
ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় শিশুটি পরিবারের সঙ্গে থাকতো। শিশুটির বাবা আব্দুস সালাম নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। তার দুই ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ওই মেয়েটি একটি স্কুলে নার্সারিতে পড়ত।
ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নুরুল আমিন বলেন, ‘সন্ধ্যায় ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটি তার মাকে বলেছিল, সে উপরে পাশের ফ্ল্যাটের যাচ্ছে একটু খেলতে। সে প্রতিদিন বিকেলে নিচে ও ভবনের উপরের ফ্ল্যাটে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে যেত। কিন্তু এদিন গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে নয় তলায় খালি ফ্ল্যাটের ভেতরে গলায় রশি দিয়ে মুখ বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় পরিবার।’
তিনি বলেন, ‘উদ্ধারের সময় শিশুটির মুখে রক্ত ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
Comment here