প্রতারণার মামলায় দণ্ডিত হেলেনা জাহাঙ্গীর কারাগারে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

প্রতারণার মামলায় দণ্ডিত হেলেনা জাহাঙ্গীর কারাগারে

জয়যাত্রা টেলিভিশনে সাংবাদিক নিয়োগের নামে প্রতারণার মামলায় দণ্ডিত আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার তিনি এ মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেন জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

একই আদালত চলতি বছর ২০ মার্চ হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচ জনের দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনি পলাতক ছিলেন। তাই তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত।

কারাদণ্ড হওয়া অপর আসামি হলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইপিটিভি জয়যাত্রার টিভির মহাব্যবস্থাপক হাজেরা খাতুন, টেলিভিশনের সমন্বয়ক সানাউল্লাহ নূরী, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজুর রহমান।

আদালত রায় ঘোষণার সময় বলেছিলেন, আসামিরা সবাই জয়যাত্রা আইডি টিভিতে কর্মরত ছিলেন। তারা এটাকে টেলিভিশন চ্যানেল পরিচয় দিয়ে সাংবাদিক নিয়োগের নামে বাদীসহ নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। পরস্পরের সহযোগিতায় একই উদ্দেশ্য তারা এ প্রতারণা করেছেন। আসামিরা এ প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেনি কেউই আদালতে বলেন নি। তাই আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।

জয়যাত্রা আইপি টিভির ভোলা জেলা প্রতিনিধি আবদুর রহমান তুহিন ২০২১ সালের ২ আগস্ট পল্লবী থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভোলা জেলার আবদুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। প্রতিবেদক হিসেবে তুহিন কয়েক মাস কাজ করলেও কোনো বেতন পাননি। অন্যদিকে তার কাছ থেকে প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা নেয় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর আদালতে হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক শাহিনুর ইসলাম।

র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর অভিযানে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই দিনগত রাতে রাজধানীর গুলশান-২ এলাকার ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি ‘জেনেটিক রিচমন্ড’-এ অভিযান পরিচালনা করে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে (৪৯) গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, ১টি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ১টি হরিণের চামড়া, ২টি মোবাইলফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, ২টি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার সরঞ্জামাদি- ৪৫৬টি চিপস জব্দ করা হয়। ওইদিনই দিনগত মধ্যরাতে তার জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশনেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে রাতেই র‌্যাব-৪ বিটিআরসির সহযোগিতায় মিরপুরে অবস্থিত হেলেনা জাহাঙ্গীরের অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশন সিলগালা করে এবং অবৈধ মালামাল জব্দ করে। পরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে চারটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। পৃথক চার মামলায় তাকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে তিনি জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠনের পোস্টার ভাইরাল হলে আলোচনায় উঠে আসেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। পোস্টারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করা হয়। এরপরই আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ হারান হেলেনা জাহাঙ্গীর।

Comment here