ঢাবি প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার আবরারের খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, সাংগঠনিকভাবে বুয়েট থেকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ আট দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এর আগে সকাল থেকেই বুয়েটে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে ‘আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার চাই’ ব্যানারে মিছিল বের করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বুয়েট শহীদ মিনারে অবস্থান করবে। দাবি মেনে নেওয়া না হলে আগামীকাল বুধবার থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
দাবিগুলো হলো-
১. খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিতভাবে শনাক্তকৃত খুনীদের সকলের ছাত্রত্ব আজীবন বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি তা তাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে ডিএসডব্লিউ স্যার কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন তা উনাকে আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে সকলের সামনে জবাবদিহি করতে হবে।
৫. আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একইসঙ্গে আহসানউল্লাহ হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল ১১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ বিকেল পাঁচটার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।
৬. রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ বিকেল পাঁচটার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
৭. মামলা চলাকালীন সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
৮. সাংগঠনিকভাবে বুয়েট থেকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতিসহ কমিটির ১১ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
Comment here