ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী : ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ মানেই গোশত খাওয়ার ধুম। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে অবশ্যই পরিবেশন করা হয় গরু বা খাসির গোশতের নানা পদ। অন্তত কোরবানিতে কম-বেশি গোশত না খেলে কি চলে? নিজ বাসায়, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খাওয়া-দাওয়ার পর্ব থাকেই। যারা সুস্থ, তারা রুচিমতো খেতে পারবেন। তবে যাদের লিভারের রোগ, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, দীর্ঘদিনের কিডনি রোগ বা গ্যাস্ট্রিক-আলসার সমস্যা আছে, তাদের বুঝে-সুঝে খেতে হবে। আবার গোশত মানেই যখন চর্বির বিষয়টি এসে যায়, তখন সুস্থ-অসুস্থ সবাইকে হিসেব করে খেতে হবে।
যতটুকু পরিমাণে গোশত খাবেন : দৈনিক গরুর গোশত খাওয়ার নিরাপদ পরিমাণ হলো ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। কোরবানি ঈদে আমরা কি এই পরিমাণে সীমিত থাকি? অনেকের ক্ষেত্রে উত্তর হবে ‘না’। তা হলে সতর্কতার সঙ্গে খেতে হবে। খাবার খেতে মানা নেই। তবে পরিমাণের দিকে নজর দিন। অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়।
গোশতের নিরাপদ রান্না যেমন হবে : জেনে রাখুন, দৈনিক খাদ্যতালিকায় ৩০ শতাংশের বেশি চর্বি না থাকাই ভালো। আর স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৭ শতাংশের বেশি হবে না। রান্নায় উপরিউক্ত পরিমাণ আন্দাজ করুন। গোশতে লেগে থাকা বাড়তি চর্বি কেটে বাদ দিন। রান্নার আগে গোশত হালকা ভেজে নিলে বা সিদ্ধ করে নিলে চর্বি কমে যায়। রান্নায় ঘি, ডালডা, তেলের ব্যবহার কম করুন। রান্নায় সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
গোশত খেয়েও ভালো থাকবেন যেভাবে : শুধু কোরবানির সময়ে নয়, সব সময় আহারের ৩০-৪০ মিনিট আগে ও পরে জল পান করুন। কুসুম গরম জল এ সময়ে বেশ উপকারী। পেট কিছুটা খালি রেখে খাবেন। খাবারে সালাদ, লেবু, কয়েক কোয়া রসুন রাখুন। ঈদের আগেই কাঁচা বাজার তথা শাক-সবজি, শসা, লেবু কিনে রাখা যেতে পারে।
টকদই খেলে হজমের উপকারে আসবে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা আছে তাদের গোশত না-খাওয়াই ভালো। তবু খুব বেশি মন চাইলে ২-৩ টুকরো চর্বিহীন গোশত খেতে পারেন। ঘরে তৈরি ফলের রস পান করুন। ডাবের জল খেতে পারেন।
লেখক : সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার শাহজাহান জেনারেল হাসপাতাল, মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী। ফোন : ০১৭২২০৪১৯৫৯
Comment here