রাবি শিক্ষার্থী হিমেলকে চিত্রকর্মে স্মরণ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

রাবি শিক্ষার্থী হিমেলকে চিত্রকর্মে স্মরণ

রাবি প্রতিনিধি : ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ট্রাকচাপায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেলকে চিত্রকর্মে স্মরণ করলেন তার বন্ধু, সহপাঠী, বড় ও ছোট ভাইবোনেরা।

হিমেলের দুর্ঘটনার চিত্র কল্পনা করে প্রতিবাদী একটি শিল্পকর্ম তৈরি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প বিভাগের তৃতীয় বর্ষে শিক্ষার্থী প্রশান্ত। এ ছাড়া অন্যরাও এঁকেছেন।

যেখানে চোখে পড়ে সুবিশাল মাঠ, তার চারদিকে অসংখ্য গাছ। এর মধ্যে একটি গাছের গায়ে লেখা ‘হিমেল সরণী’। গাছের নিচে একটি ক্যানভাসে দেখা যাচ্ছে, নির্মাণাধীন ভবনের পাশে দিয়ে একটি ট্রাক আসছে, ট্রাকের সামনের দিকে ইঞ্জিনের অংশে বড় জিহ্বা ও হিংস্র প্রাণীর মতো ভয়ংকর দাঁত বের করা, এ ছাড়া চাকার নিচে রয়েছে লাল রক্তের দাগ এবং চালক আসনের ওপরে লেখা ‘হিমেল তোর মাথা খাব’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে নির্মাণাধীন ২০তলা একাডেমিক ভবনের পাশে এমন চিত্রকল্প তৈরি করছেন কিছু তরুণ-তরুণী। যেখানে গত মঙ্গলবার রাতে ট্রাকচাপায় নিহত হন গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হিমেল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট ও ড্রামা অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।

যে স্থানটিতে হিমেলের মৃত্যু হয় সেখানে গাছের পাশে তিনদিনব্যাপী প্রতিবাদী চিত্রকর্ম অঙ্কনের আয়োজন করেছেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চারুকলার বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী শিল্পকর্ম অঙ্কন করছেন।  বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার জন্য রঙ-তুলি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে সেখানে। যে কেউ চাইলে হিমেলের স্বরণে কিছু অঙ্কন করতে পারেন।

সেখানকার কয়েকটি চিত্রের মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে, পুরো রাস্তা জুড়ে রক্ত ও একটি মরদেহ পড়ে আছে। অপরদিকে ঘাতক ট্রাকটি দাঁড়িয়ে আছে। যেটি হিমেলকে চাপা দিয়েছে। গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের শিক্ষার্থী পার্থ রায় পুরো ঘটনা নিয়ে একটি চিত্রকর্ম করেছেন। সেখানে তিনি তুলে ধরেছেন, রাস্তার দুধারে দুটি গাছ, ভগ্ন টিনের বেড়া। এক পাশে গাছের নিচে পড়ে আছে দুমড়ানো-মুচড়ানো মোটরসাইকেল ও হিমেলের মস্তকবিহীন নিথর দেহ। পুরো বিভৎস ঘটনার বর্ণনা যেন এক একটি ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে।

চারুকলা অনুষদের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আল আমিন রনক বলেন, ‘হিমেলের নির্মম মৃত্যুর প্রতিবাদ স্বরূপ আমরা এসব চিত্রকর্ম করছি। তার মৃত্যুতে আমাদের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হয়েছে, সেটি শিল্পকর্মের মাধ্যমে প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিরাপদ জায়গায় এমন মৃত্যু আসলে মেনে নেওয়ার মতো নয়। এ ছাড়া সবার মাঝে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যও আমরা কিছু কাজ করছি।’

 

Comment here