শাটল ট্রেন ঢাকায় হচ্ছে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

শাটল ট্রেন ঢাকায় হচ্ছে

রাজধানীর যানজট কমাতে সরকার একের পর এক উদ্যোগ নিচ্ছে। ফ্লাইওভার নির্মাণ, মেট্রোরেল, পাতাল রেল। এবার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে শাটল ট্রেন চালুর। ঢাকা থেকে কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে যেতে ৫৭ কিলোমিটার রেলপথে এটি চালু হবে। এ জন্য কেনা হচ্ছে ছয় সেট ব্রডগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ডেমু)। এর মাধ্যমে একদিকে রাজধানী শহরের যানজট কমবে, অন্যদিকে যাত্রীদের অর্থ ও সময় বাঁচবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ লক্ষ্যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। রাজধানীর শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করবেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে ঢাকা থেকে কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে যেতে ৫৭ কিলোমিটার পথ শাটল ট্রেন চালু করতে দুই সেট ডেমু কেনার আগ্রহ দেখিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠানো হয়। কিন্তু ভবিষ্যৎ চাহিদা ও যাত্রীদের চাপের কথা চিন্তা করে ৬ সেট ডেমু কেনার পরামর্শ দেয় পরিকল্পনা কমিশন। এ অবস্থায় ১৬১ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫১ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

সম্প্রতি প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধন করে আবার পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। চলতি বছর থেকে ২০২২ সাল নাগাদ এ ডেমুগুলো কেনা হবে বলে ডিপিপিতে বলা হয়। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাত উন্নয়নে দেশে সুষ্ঠু বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের প্রথম হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে।

এখানে আইসিটি খাতের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য বিদেশি কোম্পানিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থায় ঘাটতি থাকায় রেলপথ স্থাপন করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঢাকা থেকে কালিয়াকৈর যাতায়াত খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। শাটল ট্রেন চালু হলে ঢাকা টু কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক রুটে যাত্রীদের স্বল্প সময়ে নিরাপদে ও আরামদায়ক যাতায়াত নিশ্চিত করা যাবে।

এ জন্য ইতোমধ্যে কালিয়াকৈরে একটি বি-ক্লাস স্টেশন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামিমা নার্গিস বলেন, এ ডেমু ট্রেন চলবে ঢাকা থেকে কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক পর্যন্ত। দেশের প্রথম হাইটেক পার্কের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদিও মন্ত্রণালয় থেকে দুই সেট কেনার কথা বলা হয়। কিন্তু আমরা ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা চিন্তা করে ডেমুর পরিমাণ আরও চার সেট বাড়িয়েছি। হাইটেক পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দা এবং ওই সড়কের যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন।

এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চাপ কমবে। গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্পটি আগামী একনেকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর যানবাহনের বাড়তি চাপ ও যানজট দূর করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের আওতায় ৬ সেট ডেমু সংগ্রহ, ক্যাপিটাল স্পেয়ার্স পার্স ক্রয়, মেইটেন্যান্স স্পেয়ার্স ও স্পেশাল টোলস এবং রেলওয়ের প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা প্রথমবার দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতি আনতে এ দেশে হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালের ১৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ বোর্ডের ১২তম সভায় গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তালিবাবা ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রের ২৩১.৬৮৫ একর অব্যবহৃত জমিতে একটি হাইটেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ভূমি মন্ত্রণালয় ২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাছে এ জমি হস্তান্তর করে।

Comment here