শিক্ষামন্ত্রী ও মেয়রের বাড়িতে হামলা, এমপির কার্যালয়ে আগুন - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

শিক্ষামন্ত্রী ও মেয়রের বাড়িতে হামলা, এমপির কার্যালয়ে আগুন

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মহিউদ্দিন বাচ্চুর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে। আজ শনিবার এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আজ চট্টগ্রামে বড় সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে সংহতি জানিয়ে যোগ দেন অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিশ্ববিদ্যালয়েল শিক্ষকরা।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আগের দিনের মতো আন্দোলনকারীরা দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে যাওয়ার সময় নিউ মার্কেট মোড় ও টাইগারপাস মোড়ের পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়।

আন্দোলনকারীরা সন্ধ্যায় নগরীর ষোলশহরের চশমা হিল অতিক্রম করার সময় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। বাড়ির সামনে পড়ে থাকা দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা করা হয়।

মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী আওরঙ্গজেব ফরাজি শিবলু বলেন, হামলাকারীরা অন্তত ১৫ মিনিট ধরে মেয়র মহোদয়ের বাড়ি লক্ষ করে ইট ও পাথরের টুকরো নিক্ষেপ করে। এ সময় বহদ্দারহাটে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে আবদুস সাত্তার নামের এক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও বর্তমান সভাপতি এরশাদ উল্লাহর বাসভবনেও হামলা চালায় দুবৃত্তরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বহদ্দারহাটে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এর আগে আন্দোলনকারীরা বিকেলে কোতোয়ালি থানা, কদমতলী মোড় থেকে নিউমার্কেট সড়ক ও অলিগলি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গাজুড়ে অবস্থান নেন। সেখানে সরকারের আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে সমাবেশে সরকারের পতনের এক দফা দাবি জানান ছাত্রজনতা। এ সয়ম নিউমার্কেট ও পুলিশ বক্স ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন বিক্ষুদ্ধরা। পুরো এলাকায় কোথাও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যদের দেখা যায়নি। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে অবস্থানের পর চট্টগ্রামের নিউমার্কেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।

ওই মিছিলটি নগরীর টাইগারপাস এলাকায় গিয়ে পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। অগ্নিসংযোগ করা হয় স্থানীয় এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে। অফিসটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।

পূর্ব ঘোষণায় ষোলশহরে অবস্থানের কথা বলা হলেও বিকেলে নগরীর প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত নিউমার্কেট মোড়ে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। আধাঘণ্টার মধ্যেই হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। এরপরই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ শ্রেণিপেশার মানুষ যোগ দেন।

রিয়াজউদ্দিন বাজার, স্টেশন রোড, আমতল, জুবিলী রোড এবং সিটি কলেজ অভিমুখী সড়কে দখলে নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এতে নিউমার্কেট অভিমুখী ব্যস্ত চার সড়কেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জমায়েত থেকে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, সেনাবাহিনীর সরকার’। সেখানে তারা সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবির কথা বলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক মাহমুদ হাসান জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান আমরা মানি না। শত শত নিরীহ শিশু-ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করে কিসের সংলাপ? এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’

Comment here