নিজস্ব প্রতিবেদক :সরকার পতনের আন্দোলন শুরুর আগে অতি দ্রুত দলের মধ্যকার ‘বিভেদ-গ্রুপিং’ দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব সকল পর্যায়ের নেতাদের প্রতি এই আহ্বান জানান।
টঙ্গীতে সালাহ উদ্দিন সরকারের বাসাভবন মিলনায়তনে গাজীপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।
আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ কী করছে, করুক। জনগণের কাছে তাদের অন্যায় টিকে থাকতে পারবে না, তারা ভেসে যাবে। জনগণের উত্তাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তারা (আওয়ামী লীগ) ভেসে যাবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। আসুন অতি দ্রুত আগামীতে আমরা নিজেদেরকে পুরোপুরি সংগঠিত করে ফেলি, নিজেদের ভুল বুঝাবুঝি, বিভেদগুলো দূর করি। আমরা একত্র হয়ে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে একত্র করে যে দানব আমাদের বুকে ওপর চেপে বসছে তাকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে মধ্য দিয়ে আমরা যেন জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারি সেজন্য কাজ করি।’
বর্তমান অবস্থাকে সংকটময় অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থার পরিবর্তন আমাদেরকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে আমাদেরকে করে দিয়ে যাবে না। আমাদেরকে বিএনপিকে দায়িত্ব নিতে হবে। বিএনপি হচ্ছে সেই দল যারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যার প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন শহীদ জিয়াউর রহমান যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।’
গাজীপুরের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘যখন সংগঠন নিজেরা তৈরি করতে যাই, তখন গ্রুপিং-গ্রুপিং। আমার লোক কে এটা খুঁজি। এটা খোঁজা যাবে না। আপনাকে জিয়াউর রহমানের লোক খুঁজতে হবে, বেগম খালেদা জিয়ার লোক খুঁজতে হবে।’
সাবেক রাপতি জিয়াউর রহমানকে কূটনৈতিকভাবে সফল দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিশ্বের যে সব দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি, তাদের স্বীকৃতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন জিয়াউর রহমান। এমনকি যে পাকিস্তানকে পরাজিত বরে দেশ স্বাধীন হয়েছে তারাও স্বীকৃতি দিতে বাধ্য দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বড় পদ নিয়ে ঘরে বসে থাকি, তাহলে রাজপথ শূণ্য থাকবে। তাই আমরা পদমূখী না হয়ে পথমূখী হই, রাজপথের সাথীকে নেতৃত্বে আনি, তাহলেই রাজপথের নেতৃত্ব টেকসই হবে।’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ আমাদের উপর রুষ্ট। এই মানুষগুলো সবাই বিএনপিকে ভালোবাসে। তারা আমাদের রাজপথে দেখতে চায়, তারাও আমাদের সাথে রাজপথে নামতে চায়। তাই কথা না বলে রাজপথে থাকতে হবে।’
সভায় জেলার সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য ওমর ফারুক শাফিনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য প্রদা করেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম আজাদ, সালাহ উদ্দিন সরকার, কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, সোহরাব উদ্দিন, মজিবুর রহমান ও হুমায়ুন কবির খানসহ প্রমুখ।
Comment here