‘হুমকির মুখে’ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

‘হুমকির মুখে’ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : দেশের বৃহত্তম রেলসেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। এর ফলে হুমকিতে পড়েছে লালন শাহ সেতু, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, নদী রক্ষা বাঁধসহ আশপাশের কয়েক শ একর ফসলি জমি।

জানা যায়, পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিজের নিচে পিলার ঘেষে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ব্রিজের ৩ নম্বর পিলার  থেকে ২ নম্বর পিলার পর্যন্ত নদীর চর ভেঙে গেছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে নদী রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়তে পারে। সেই সঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালনশাহ সেতুরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

গত ৩০ বছরে এখানে এমন ভাঙন দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদী পাড়ের বাসিন্দারা ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন। ভাঙন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচের ফুসকা ও চটপটি বিক্রেতা জিয়াউর রহমান বলেন, চলতি বছরের শুরুতে ৪ নম্বর পিলারের কাছে চর ছিল। এখন চর ভাঙতে ভাঙতে তা ২ নম্বর পিলারের কাছে চলে এসেছে। দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুরা হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে চরে ঘোরাফেরা করতে আসেন। অস্থায়ী দোকানপাটে তারা কেনাকাটা ও খাওয়া-দাওয়া করেন। এভাবে নদীর তীর ভাঙতে থাকলে এখানে আর মানুষজন আসবে না। আমাদের ব্যবসাও থাকবে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন বলেন, গত ১১ দিনের ব্যবধানে পদ্মায় পানি বেড়েছে দুই মিটারের বেশি। ২৫ জুলাই পানির পরিমাণ ছিল ৯ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় পানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার। প্রতিদিন পদ্মায় গড়ে ২৫ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি বাড়ছে। একই সঙ্গে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পদ্মার চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পাকশী রেলওয়ে বিভাগের প্রকৌশলী (সেতু) নাজিব কাওছার বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পিলারের আশেপাশের স্থান নদীতে ভেঙে গেলেও ব্রিজের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ ব্রিজের পিলার নদীর গভীরে পাইলিং করে স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘পাবনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে আমার একাধিকবার কথা হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’

পাবনা পা্উবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন বলেন, ‘হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আশেপাশের এলাকাসহ সাঁড়াঘাটে ভাঙন রোধে গত বছর প্রায় দুই কোটি টাকার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। এবার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি জেনেছি। পানি কমতে শুরু করলে জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ভাঙনে ব্রিজ বা নদী রক্ষা বাঁধের ক্ষতির কোনো শঙ্কা নেই। তবে নদীর চর ভাঙবে ও জাগবে এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আমরা এ বিষয়টি সব সময় নজরে রেখেছি। কোনো ধরনের সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

Comment here