অবশেষে বোধহয় একটু বিশ্রামের সুযোগ পেলাম : ডা. ফেরদৌস - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

অবশেষে বোধহয় একটু বিশ্রামের সুযোগ পেলাম : ডা. ফেরদৌস

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে চিকিৎসা দিতে দেশে এসেছেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। দেশে আসার আগে ও পরে তাকে নিয়ে শুরু নয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আশকোনার হজ ক্যাম্পে, সেখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে তাকে।

কোয়ারেন্টিনে থেকে গতকাল রোববার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। সেখানে তিনি তার কোয়ারেন্টিনে থাকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। দৈনিক আমাদের সময়ের পাঠকদের জন্য ডা. ফেরদৌস খন্দকারের ফেসবুক পোস্টটি তুলে ধরা হলো-

‘একটু বিশ্রাম পেলাম

আমার জীবনটাকে বরাবরই একটা নিয়মের মধ্যে পরিচালিত করেছি আমি। এক জীবনে কখনোই নিয়মের বাইরে যাইনি। তবে সবসময়ই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে।

পরিশ্রমকে ভয় পাইনি। পড়াশোনার প্রতি আমার ভালো লাগা সব সময়ের। সেই সাথে সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছি। ছাত্র অবস্থায় যেমন, কর্মজীবনেও তাই। হিসাব করে দেখেছি, দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টার বেশি ঘুম আমার কখনোই হয়নি। কাজ কাজ আর কাজ। এই বয়সেও নিয়মিত নানা বিষয়ে পড়াশোনা, চিকিৎসা পেশা; সেই সাথে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

সাধারণত খুব সকালে ঘুম থেকে উঠি আমি। নিয়মিত জিম করি। এরপর ব্যস্ততম এক একটি দিন শুরু হয়। দিনভর কাজে ক্লান্তি ভর করে। বিশ্রামের সময় খুব কমই পেয়েছি। এরপর যখন করোনার সময় এলো, তখন পরিস্থিতি আরও বদলে গেল। এমনও দিন গেছে; যেখানে ১৮ ঘণ্টার মতো কাজ করতে হয়েছে। এমনও হয়েছে; ঘুম কী জিনিস, সেটাই যেন ভুলে গিয়েছিলাম।

জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করেছি মানুষের জন্য কাজ করার প্রয়াস থেকে। সবসময়ই মনে হতো, মানুষের জন্যে যদি আর একটু বেশি কিছু করতে পারতাম! এই তৃষ্ণা যেন মেটে না। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে; ভালোবাসা নিয়ে বলেছি, ‘আমি আছি’। নিজের সাধ্য অনুযায়ী যতটা পেরেছি করেছি।

বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করতে আসার পর; নিয়ম মেনেই আমাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আমিও নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই কোয়ারেন্টিনের দিনগুলো কাটিয়ে দিচ্ছি। মনে হচ্ছে, অবশেষে বোধ হয় একটু বিশ্রামের সুযোগ পেলাম। এখানে খুব ভালো দিন কাটছে আমার। আশপাশে থাকা মানুষগুলো অসাধারণ। তাদের মমতা আমাকে মুগ্ধ করছে।

দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুমাচ্ছি। বন্ধুদের সাথে ডিজিটাল আড্ডা হচ্ছে। প্রচুর পড়াশোনা করছি। খাওয়া দাওয়া; সবকিছু ঠিকঠাক আছে। মনে হচ্ছে; কখনো এমন কোনো উপলক্ষ্য আসে; যেটা হয়তো প্রয়োজন। এই বিশ্রামের সময়টাকে তাই আশীর্বাদ বলেই ধরে নিয়েছি। ভবিষ্যত সুস্থতার জন্যে এই বিশ্রামটুকু প্রয়োজন ছিল।

ভয় শুধু একটাই-ওজন যদি বেড়ে যায়!

আমি ভালো আছি। আপনারা সবাই ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন।’

Comment here