অস্ত্রের মামলায় স্বাস্থ্যের মালেকের ৩০ বছরের কারাদণ্ড - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

অস্ত্রের মামলায় স্বাস্থ্যের মালেকের ৩০ বছরের কারাদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক হয়েও নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া আব্দুল মালেককে অস্ত্র আইনের মামলায় ৩০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকা মহানগর ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে অবৈধ অস্ত্রের জন্য ১৫ বছর কারাদণ্ডের সঙ্গে অবৈধ গুলি রাখার জন্য আরও ১৫ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মাদ সালাহউদ্দিন হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর আসামি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থপন শেষে রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়। মামলায় আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহিনুর ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

তার আগে মামলাটিতে ঢাকার এক নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ চার্জশিটের ১৩ জন সাক্ষীর ১৩ জনেরই সাক্ষ্য গ্রহণ করে গত ৬ সেপ্টেম্বর অবশিষ্ট অংশ বিচারের জন্য বর্তমান আদালতে প্ররেণ করেন।

চলতি বছর ১১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১ -এ কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান চৌধুরী আদালতে এ আসামির বিরুদ্ধে এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর একই আদালত চলতি বছর ১১ মার্চ এ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। গত ২৪ আগস্ট থেকে মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

অবৈধ অস্ত্র, জাল নোট ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গাড়িচালক আব্দুল মালেক ওরফে ড্রাইভার মালেককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় র‌্যাব অস্ত্র ও বিশেষ হ্মমতা আইনের দুই মামলা দায়ের করেন।

মামলাগুলোয় কয়েক দফা রিমান্ড শেষে ওই বছর ৯ ডিসেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।

রাজধানীর তুরাগে গাড়িচালক আব্দুল মালেকের রয়েছে ২৪টি ফ্ল্যাটবিশিষ্ট সাত তলার দুটি বিলাসবহুল বাড়ি। একই এলাকায় ১২ কাঠার প্লট। এ ছাড়া হাতিরপুলে ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, অধিদপ্তরের কর্মচারী হলেও মালেক ছিলেন প্রভাবশালী। তিনি অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ, বদলি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার কথামতো কর্মকর্তারা কাজ না করায় তাদের নানাভাবে হয়রানি বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

মালেক একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হলেও নিজে ব্যবহার করতেন পাজেরো গাড়ি। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যেসব চালকরা আছেন তাদের তেল চুরির টাকার বেশিরভাগই মালেকের পকেটে যেতো। রাতারাতি বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক বনে যান। এসব টাকা দিয়ে মালেক ঢাকা শহরে একাধিক আলিশান বাড়ি, ফ্ল্যাট এমনকি ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ টাকা রেখেছেন।

 

Comment here