নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদকে কেন্দ্র করে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রসহ পার্ক এবং টুরিস্ট স্পটসমূহে জনসমাগম না করার জন্য জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আজ বুধবার বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পুলিশের সব ইউনিট প্রধানের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত মিটিংয়ে এসব কথা বলেন আইজিপি।
আইজিপি বলেন, ‘সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে পশুর হাটে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে। সম্ভব হলে ইজারাদারদের সাথে সমন্বয় করে পশুর হাটের প্রবেশপথে জীবাণুরোধী চেম্বার স্থাপন করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘পশুর হাটে জালনোট বন্ধে পুলিশি তৎপরতা বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করতে না পারে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি ও অরাজকতা বরদাশত করা হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আইজিপি। চামড়া পাচার রোধেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেন তিনি।
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো পরিবহন অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে পারবে না। লঞ্চসহ সব ধরনের জলযান অতিরিক্ত যাত্রী নিতে পারবে না। সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ মসজিদে ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে যেন কোনো গোষ্ঠী বা মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো ধরনের গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারি ও মনিটরিং বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা সম্পর্কে সদা সতর্ক ও তৎপর থাকতে হবে। নিয়মিত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে হবে, নজরদারি বাড়াতে হবে।’
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ফোর্সের কল্যাণ ও দায়িত্ব বন্টনের পরামর্শ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশে করোনা সংক্রমণের হার শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। আমরা কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধ বিষয়ক হ্যান্ডবুক প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের কাছে প্রেরণ করেছি। পুলিশ সদস্যদেরকে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
‘আমরা দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত পুলিশ গড়তে চাই। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ৬৬০ থানার অফিসার ইনচার্জকে মাদক ও দুর্নীতি বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্য মাদকাসক্ত সন্দেহ হলে তার ডোপ টেস্ট করানোর নির্দেশ দেন আইজিপি।
সভায় আগামী মাসে জাতীয় শোক দিবস, পবিত্র আশুরা এবং শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও প্রদান করেন আইজিপি।
Comment here