সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতীকি লাশের ছবি ও স্ট্যাটাস পোস্ট করে ইব্রাহিম হোসেন (১৮) নামে রাজশাহীর এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। গতকাল বুধবার রাতের কোনো এক সময় নিজ ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
ইব্রাহিম রাজশাহী মহানগরীর ডাশপুকুর এলাকার ফিরোজ আহম্মেদের ছেলে। এবার বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন।
ইব্রাহিমের বন্ধু সৌরভ শেখ বলেন, ‘গতকাল বুধবার অর্থনীতি প্রথমপত্র পরীক্ষা ভালো হয়নি বলে জানিয়েছিল ইব্রাহিম। এ কারণে ও আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। কিন্তু হঠাৎ করে সে এমন সিদ্ধান্ত নিবে আমরা কেউ ভাবতে পারেনি।’
এদিকে ছেলের আত্মহত্যার ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন বাবা ফিরোজ আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘এমন কি ঘটলো যে আমার ছেলে আত্মহত্যা করলো।’ তার ধারণা এ ঘটনায় অন্য কারো প্ররোচনা থাকতে পারে। তাই ঘটনার গভীরে গিয়ে পুলিশ তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে আশা ফিরোজের।
গতকাল ইব্রাহিম তার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে একটি প্রতীকি লাশের ছবি দিয়ে স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন-‘এই দিনটা মানুষকে দেখানোর অপেক্ষায়।
কিছুক্ষণ পর নাফি অপূর্ব নামে তার এক ফেসবুক বন্ধু কমেন্টে লেখেন, ‘পোস্টটি ডিলেট করো, নেক্সট টাইম এমনটা যেন না হয়, তোমাকে ভালোবাসি। আর কে বাসে না সেটি জানি না, বাট আই লাভ ইউ ব্রাদার।’
জবাবে ইব্রাহিম লেখেন-‘আমি তোকে অনেক ভালবাসি রে ভাই, কিছু করার নাই।’
মো. আল-আমিন নামে তার আরেক বন্ধু সেই পোস্টে কমেন্ট করেন, ‘এভাবে চলে যাবি না ফেরার দেশে কখনো ভাবতে পারিনি।’
তাওয়াব মিম নামে তার এক ফেসবুক বন্ধু লিখেছেন, ‘খুব কষ্ট হচ্ছে ভাই, অনেক কষ্ট হচ্ছে। অনেক মিস করবো, যেখানেই থাকো ভালো থাকো। আল্লাহ তোমার হেফাজত করুক।’ এভাবে তার সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রায় ১৭ জন বন্ধু আফসোস করে কমেন্ট করেছেন।
জানতে চাইলে মহানগরীর রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শিরিন আক্তার বলেন, ইব্রাহিম নামে ওই এইচএসসি পরীক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় খবর দেয়। পরে পুুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল (রামেক) কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
তিনি জানান, ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হবে। তার আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি। তবে আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Comment here