এরশাদের মরদেহ রংপুরে পল্লী নিবাস বাসভবনে দাফন করা হবে : মেয়র - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রংপুরসমগ্র বাংলা

এরশাদের মরদেহ রংপুরে পল্লী নিবাস বাসভবনে দাফন করা হবে : মেয়র

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের লাশ রংপুর থেকে ঢাকা নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে ঢাকায় দাফন করতে নিয়ে যাওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।  তার দাফন রংপুরেই হবে।

আজ সোমবার দুপুরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে দলীয় কার্যালয়ে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জাপা নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

সিটি মেয়র বলেন, এরশাদের মরদেহ রংপুরে আনার পর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে পল্লী নিবাস বাসভবনে দাফন করা হবে। এরশাদের দাফন রংপুর ছাড়া ঢাকায় করার যেকোনো প্রচেষ্টা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের নেতাকর্মীরা রক্ত দিয়ে হলেও প্রতিহত করবে।

মোস্তফা বলেন, এরশাদ অনেক আগেই  রংপুরের পল্লী নিবাসের বাসভবনে দাফন করার ওসিয়ত করে গেছেন। এরশাদকে বাংলাদেশের জনগণের মন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। তাকে সকল স্তরের মানুষ যাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে, সে জন্যই আমরা তাকে রংপুরে দাফন করতে চাই। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীসহ সারা দেশের মানুষ চায়, এরশাদকে রংপুরে দাফন করলে সকল স্তরের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পারবে।

সিটি মেয়র আরও বলেন, এরশাদের মারা যাওয়ার পর পরেই দলের মধ্যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এরশাদের ঘোষিত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে দল পরিচালিত হবে, সে জন্য জি এম কাদেরের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

জরুরি সভায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার জাপা নেতারা বক্তব্য দেন। বৈঠকে বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার যদি গোপালগঞ্জে হতে পারে, জিয়াউর রহমানের যদি দাফন হয় সংসদের উন্মুক্ত স্থানে হয়, তাহলে কেন এরশাদের দাফন রংপুরে হবে না?

তারা বলেন, ঢাকায় যেখানে দাফন করার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে সাধারণ মানুষের যাওয়া সম্ভব নয়। এর মাধ্যমে জাতীয় পার্টির রাজনীতিকে ধবংস করার একটা পরিকল্পিত চক্রান্ত চলছে। এরশাদকে রংপুরে দাফন করা হলে সকল স্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।

রংপুর সিটি মেয়র ও মহানগর জাপা সভাপতি মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন মহানগর সম্পাদক এসএম ইয়াসির, পঞ্চগড় জেলা জাপা সভাপতি সালেক, রাজশাহী বিভাগের পক্ষে বগুড়া জেলা জাপা সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুখ হোসেন, গাইবান্ধা জেলা সভাপতি আব্দুর রশীদ সরকার, ঠাকুরগাও জেলা জাপার সদস্য সচিব আলী রাজু স্বপন, দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাপা নেতা জুলফিকার আলী, দিনাজপুর জেলা জাপা সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ আলী, সাবেক নারী এমপি শাহানারা বেগম, পীরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাপা নেতা মাহবুবার রহমান প্রমুখ।

এদিকে এরশাদের মৃত্যু পরবর্তী অনুষ্ঠানিকতার জন্য রংপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মাঠে প্যান্ডেল নির্মাণ, মাইক সংযোগ স্থাপন ও মাঠ পরিষ্কার করা হয়েছে। নগরজুড়ে চলছে জানাজায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে মাইকিং। দলীয় নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করার পাশাপাশি কার্যালয়ে উত্তোলন করা হয়েছে কালো পতাকা।

পাড়া-মহল্লার মসজিদ মাদ্রাসায় এরশাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে চলছে দোয়া মাহফিল ও কোরআন খতম। জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়সহ নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে মাইকে কোরআন তেলায়াত প্রচারের পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করে ব্যানার লাগানো হয়েছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হেলিকপ্টার যোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের মরদেহ রংপুরে নেওয়া হবে। সেখানে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে/ ঈদগাহ মাঠে বাদ জোহর তার চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বিকেলেই ঢাকায় এনে সামরিক কবরস্থানে এরশাদকে দাফন করার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, জাপা চেয়ারম্যান ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে মারা যান। রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন এরশাদ।

Comment here