কথা রাখেন না ব্যবসায়ীরা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

কথা রাখেন না ব্যবসায়ীরা

আব্দুল্লাহ কাফি : প্রতিবারই রমজান মাসের আগে পণ্যমূল্য সহনীয় রাখার প্রতিশ্রুতি দেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রতিবছরই তারা সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন। এবারও ব্যতিক্রম নয়। রোজা শুরুর আগে পণ্যমূল্য সহনীয় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির কোনো প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। রোজার আগেই বেড়ে যায় অনেক পণ্যের দাম।

রাজধানীর মতিঝিলে গতকাল বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে বিভিন্ন বাজার কমিটি ও পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দুবাইয়ে গরুর মাংসের দাম ৫০০ টাকা। তারা ব্রাজিলসহ অন্য দেশ থেকে আমদানি করে। তাদের (দুবাই) নিজের দেশে কোনো গরুর খামার নেই। ভোক্তাদের সুরক্ষা দিতে প্রয়োজনে গরুর মাংসও আমদানি করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি ব্যবসায়ীদের বলেন, ‘এবার সরকার বাজার মনিটরিংয়ে থাকবে কঠোরভাবে। কোনো বাজারে বেশি মূল্য রাখা হলেই কিন্তু বাজার কমিটি বাতিল করবে সরকার। একই সঙ্গে দাম বেশি নেওয়া প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে। আমরা চাই না, রোজায় কোনো ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল হোক, কাউকে আটক করা হোক।’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের সমস্যা থাকতে পারে। সমস্যাটি আমাদের জানাবেন। আমাদের সেলে জানান, আমরা কথা বলব। আমাদের টিমও বাজার মনিটরিংয়ে থাকবে। আশা করব আপনারা কেউ বেশি মুনাফা করবেন না। বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি খেজুর আছে। পর্যাপ্ত রয়েছে ছোলা, পাম অয়েল, সয়াবিনসহ অন্যান্য পণ্য।

সভায় সিটি গ্রুপের প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমাদের কাছে চিনি-ভোজ্যতেলের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে রোজায় কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না।’

এফবিসিসিআই সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু আমাদের সময়কে বলেন, ‘চিনি, তেল, ছোলা, ডালসহ রোজার পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এসব পণ্যের দাম সরকার যা নির্ধারণ করেছে, সে দামেই বিক্রি করতে হবে। কোনো ব্যবসায়ী যদি বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করে, তাহলে ওই বাজার কমিটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’ তিনি বলেন, ‘১৪০ টাকার ব্রয়লার মুরগির দাম কীভাবে ২৭০ টাকা হলো? এটা মধ্যস্বত্বভোগীরা করেছে।’

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফার লোভে ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে।’ উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের একজন শাড়ি কিনতে গিয়েছিল। এক বিক্রেতা শাড়ির দাম চায় ১২ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতা বললেন ৫ হাজার টাকার বেশি পারবেন না। তখন বিক্রেতা কিন্তু ৫ হাজার টাকায় দিয়ে দেন। তাহলে ওই বিক্রেতা কত লাভ করতে চেয়েছিলেন?’

তিনি বলেন, ‘সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে পণ্যের দাম কমার কথা। ব্যবসায়ীরাই তো বলছেন, পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। তাহলে দাম বাড়বে কেন?’ এ বিষয়ে সরকারের কঠোর মনিটরিং থাকা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

ক্যাবের অনলাইন প্লাটফর্ম ‘ভোক্তা কণ্ঠ’র সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘একদিকে পণ্যের দাম বাড়াবে, আর একদিকে আশ^স্ত করবে যে দাম বাড়বে না। এটা ভোক্তাদের সঙ্গে মশকরা ছাড়া কিছু না। যা বেড়েছে তো বেড়েছে, আর যাতে না বাড়ে সেদিকে সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকতে হবে।’

 

Comment here