করোনায় মৃত্যু সন্দেহ : বগুড়ার গৃহবধূ স্বামীর বাড়িতে দাফন বঞ্চিত - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

করোনায় মৃত্যু সন্দেহ : বগুড়ার গৃহবধূ স্বামীর বাড়িতে দাফন বঞ্চিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এমন সন্দেহে ইসমত আরা (২৬) নামে এক নারীকে তার স্বামীর এলাকায় দাফন থেকে বঞ্চিত করেছে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন। গত রোববার মারা যান ওই নারী, পরে সোমবার তাকে রংপুরে তার বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়।

ইসমত আরার স্বামীর নাম আতোয়ার হোসেন। জানা গেছে, গাবতলী দক্ষিণপাড়া ইউনিয়নের পাড়াবাইশা গ্রামে তাদের বাড়ি হলেও স্বামীর চাকরির সুবাদে এক বছর বয়সী জমজ সন্তান নিয়ে ঢাকার নারায়ণগঞ্জে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।

আতোয়ার জানান, গত শনিবার তার স্ত্রীর পাতলা পায়খানা হয়। রোববার তিনি মারা যান। পরে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে স্ত্রীর লাশ দাফনের জন্য নিজ গ্রামের উদ্দেশে রওয়ানা হন। কে বা কারা তার এলাকা গাবতলীর জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে জানিয়েছে, ইসমত আরা করোনাভাইরাসে আক্রন্ত হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া তার দুই সন্তানও অসুস্থ। যে কারণে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা ইসমত আরার লাশ পাড়াবাইশা গ্রামে দাফন না করতে এবং এলাকায় না নিতে চাপ প্রয়োগ করেন।

আতোয়ার আরও জানান, পরে তার শ্বশুর বিষয়টি জানতে পেরে মেয়ের লাশ রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সুখানচৌকি এলাকায় তার গ্রামে নিয়ে যেতে বলেন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে সেখানে ইসমত আরার লাশ দাফন করা হয়।

আতোয়ার বলেন, লাশ আনার সময় পুলিশের চাপে নিজের ও সন্তানদের চেকাপ করাই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকরা আমাদের শরীরে কোনো অসুখ পাননি।

গাবতলীর দক্ষিণপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সাইফুল এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসিকে অবহিত করা হয়েছে। মৃত নারীর স্বামীকে করোনাভাইরাসের দাপট সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে। তাই তিনি যা করেছেন তা জনস্বার্থে করেছেন। ভুল হয়ে থাকলে কিছু করার নেই।

গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজা আহমেদ জানান, পুলিশ সারা রাত আতোয়ারের বাড়িতে পাহারা দিয়েছে। কিন্তু পরিবারের লোকজন লাশ এখানে না এনে রংপুরে নিয়ে গেছে।

গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রওনক জাহান বলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই শুধু এলাকাবাসীর চাপের মুখে ওই গৃহবধূর প্রতি অবিচার করা হয়েছে। তাকে অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে।’

জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি নিজে ও জেলা প্রশাসক ফোনে চেষ্টা করেও কাউকে পাননি। পরে তিনি জানতে পারেন, রংপুরে বাবার বাড়িতে ওই গৃহবধূর লাশ দাফন করা হয়েছে।

Comment here