করোনা আতঙ্কে কাছে যায়নি কেউ, লাশ রেখে পালালেন স্বজনরা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

করোনা আতঙ্কে কাছে যায়নি কেউ, লাশ রেখে পালালেন স্বজনরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে উপসর্গ নিয়ে গত পাঁচদিন ধরে ভুগছিলেন এক বৃদ্ধ (৭০)। গতকাল বুধবার সকালে তিনি মারা যান। তবে মারা যাওয়ার পর করোনা আতঙ্কে পরিবারের কেউ লাশের কাছে যাননি। শুধু তাই নয়, ভয়ে বাড়ি থেকেও পালিয়ে যান তারা।

নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলা এলাকায় ঘটেছে এমন ঘটনা। খবর পেয়ে ওই বৃদ্ধের লাশ কাঁধে তুলে নেন স্থানীয় এক কাউন্সিলর। পরে গোসল ও জানাজা শেষে ওই বৃদ্ধকে দাফন করেন তিনি ও তার লোকজন।

করোনা দুর্যোগে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে এগিয়ে আসা এই কাউন্সিলরের নাম মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

করোনা কিংবা করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ দাফনের ঘোষণা দিয়েছিলেন এই কাউন্সিলর। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার দুপুরে মাসদাইর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে ওই বৃদ্ধের দাফন সম্পন্ন করেন তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জামতলা এলাকায় পাঁচদিন ধরে করোনার উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ থাকার পর বুধবার সকালে ওই বৃদ্ধ মারা যান। কিন্তু করোনায় মৃত্যু হয়েছে আতঙ্কে বৃদ্ধের লাশ রেখে পালিয়ে যান স্বজনরা। বৃদ্ধের ঘরে স্ত্রী ও দুই মেয়ে আছেন।

স্থানীয়রা আরও জানায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘরের ভেতর খাটে বৃদ্ধের লাশ পড়ে থাকলেও স্বজনদের কেউ দেখতে আসেনি। পরে প্রতিবেশীদের দেয়া খবরে কাউন্সিলর ও তার লোকজন লাশ নিয়ে মাসদাইরের কবরস্থানে তাকে দাফন করেন।

জানতে চাইলে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘পরিবারের দাবি করোনাভাইরাসের সব উপসর্গ নিয়ে গত পাঁচদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন ওই বৃদ্ধ। তাই বুধবার সকালে মারা যাওয়ার পরও করোনা আতঙ্কে পরিবারের কেউ লাশের কাছে যাননি। ভয়ে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করি আমরা। এরপর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় সব নিয়ম মেনে সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করি।’

তবে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন মৃত বৃদ্ধের নমুনা সংগ্রহ করেনি বলেও জানান এই কাউন্সিলর। তিনি আরও বলেন, ‘কথা দিয়েছিলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে লাশ দাফন করব। বুধবার থেকে কার্যক্রম শুরু হলো। করোনায় যারাই মারা যাবে তাদের দাফন করব আমরা। কেউ করোনায় মারা গেছে আমাদের জানালেই হবে। লাশ সংগ্রহ, কবর খনন, গোসল ও জানাজা শেষে দাফন করব আমরা।’

এর আগে বাজারে যখন হ্যান্ড স্যানিটাইজার সংকট তখন নিজ উদ্যোগে হাজার হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন কাউন্সিলর খোরশেদ।

Comment here