করোনা ব্যাপকভাবে ছড়াতে পারে ২০ দেশে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
আন্তর্জাতিক

করোনা ব্যাপকভাবে ছড়াতে পারে ২০ দেশে

দৈনিক মুক্ত আওয়াজ ডেস্ক : চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর ছাড়িয়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির সব অঞ্চলে। এমনকি চীন ছাড়িয়ে এই ভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বিশ্বের ২৯টি দেশে। এমন পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা যেন চীন ছাড়িয়ে দ্রুত মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য নানা রকম আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে বাংলাদেশসহ অন্যরাও।

কিন্তু তার পরও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ খুব দ্রুত ২০টি দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে এক সমীক্ষায় জানিয়েছে জার্মানির হামবোল্ট ইউনিভার্সিটি ও রবার্ট কচ ইনস্টিটিউট। আশার কথা হলো শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ এই দেশগুলোর তালিকায় যেমন বাংলাদেশের নাম নেই, তেমনি আশঙ্কার বিষয় হলো তালিকায় ১৭ ও ২০ নম্বরে নাম এসেছে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের।

‘এক্সপেক্টেড গ্লোবাল স্প্রেড অব দ্য নভেল করোনা ভাইরাস’ শীর্ষক এই সমীক্ষা বিশ্বের প্রায় ২৫ হাজার বিমানবন্দরে যাত্রীদের আসা-যাওয়ার ওপর করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামার সংখ্যা, চরিত্র, গন্তব্য ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে সেই তথ্যের কম্পিউটারভিত্তিক ও গাণিতিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সমীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার আপেক্ষিক অনুপাত বের করা।

সম্প্রতি ‘সায়েন্স ম্যাগাজিন’-এ সমীক্ষার ওপর একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কত সংখ্যক এবং কত সময়ের ব্যবধানে বিমান চলাচল করে, তার ওপর ভিত্তি করে বলা সম্ভব ওই নির্দিষ্ট এলাকায় করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার হার কেমন হতে পারে। বিমানবন্দর যত ব্যস্ত হবে, সেখানে এ ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভবনাও বেশি।

সমীক্ষা অনুযায়ী করোনা ভাইরাস ছাড়ানোর ঝুঁকির দিক থেকে সবচেয়ে শীর্ষে আছে থাইল্যান্ড। এর পরের চার অবস্থানে নাম এসেছে যথাক্রমে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, তাইওয়ানের। ইতোমধ্যেই থাইল্যান্ডে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ জন। জাপানে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ জন, যার মধ্যে ৬৪ জনই একটি প্রমোদতরীর।

এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ জন। তালিকার পরবর্তী ১৫ দেশ হলো যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ম্যাকাও, ফিলিপাইন, রাশিয়া, কানাডা, ভারত, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিয়ানমার।

এই সমীক্ষাকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মডেল মনে করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন এর এক গবেষক। ডির্ক ব্রকম্যান নামে ওই গবেষক বলেন, এটি সংখ্যাগত পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়। জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকদের কিছু একটা ধারণা করতে হবে; কারণ ভাইরাসটি এখনো অজানা। এ মডেলগুলো সেই ধারণা করতে সাহায্য করতে পারে।

এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত আছে। দেশটির সরকারি হিসাব অনুযায়ী গত শনিবার পর্যন্ত সেখানে ৮১১ জন মারা গেছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ১৯৮-এ। এর মধ্যে শনিবার একদিনেই মারা গেছে রেকর্ডসংখ্যক, ৮৯ জন। একই দিন হংকং ও ফিলিপাইনেও দুজন মারা গেছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জনিয়েছে, করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ২০০২-০৩ সালে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্সকেও অতিক্রম করেছে। সে সময় সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪টিরও বেশি দেশে মোট ৭৭৪ জনের প্রাণহানি হয়েছিল।

Comment here