করোনা রোগী ‘দেখতে না চাওয়া’য় বরখাস্ত, যা বললেন দুই চিকিৎসক - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

করোনা রোগী ‘দেখতে না চাওয়া’য় বরখাস্ত, যা বললেন দুই চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে কখনোই অস্বীকৃতি জানাননি বলে জানিয়েছেন কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল থেকে সাময়িক বরখাস্ত দুই চিকিৎসক।

একটি বেসরকারি টেলিভিশন ও ফেসবুকে নিজেদের নির্দোষ হওয়ার ব্যাক্ষা দেন হাসপাতালটির মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মুহাম্মাদ ফজলুল হক এবং একই হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা) শারমিন হোসেন।

টেলিভিশনে এক টক শো’তে ডা. মুহাম্মদ ফজলুল হক জানান, তিনি নিয়মিত হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ৩১ মার্চ পর্যন্ত ফোকাল পারসন হিসেবে কাজ করেছেন। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রোস্টার করতে অনুরোধ করলে তাকে ১৫-২১ এপ্রিল রোস্টার দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, একটি হোটেলে অবস্থান করে দুর্যোগে সেবা দেওয়ার জন্য নিজেকে তিনি প্রস্তুত করেছেন। নিজেকে কোয়ারেন্টিনে রেখেছেন। ডা. মুহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, ‘কখনও দায়িত্বপালনে অনীহা প্রকাশ করিনি। রোস্টার ডিউটি না থাকলেও হাসপাতালে গেছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে কখনও ইনফরম করেনি। বরখাস্তের খবরে আমি মানসিকভাবে অত্যন্ত কষ্ট পাই। আমি হেয় হই। এর সুবিচার চাই।’

এদিকে গতকাল রোববার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে আসেন হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা) শারমিন হোসেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক স্যার আমাকে কোনো টেলিফোন না করে বা কোনো কিছু না জানিয়ে আমার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নাম পাঠিয়েছেন যে আমি নাকি কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে ইচ্ছুক না। এমন কথা আমি মৌখিক বা লিখিতভাবে কখনো স্যারের কাছে অথবা কারও কাছে প্রকাশ করেছি বলে আমার জানা নেই।’

লাইভে শারমিন জানান, তিনি ১ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করেন। রাতের পালার কাজ সেরে বাসায় ফেরেন সকালে। এক দিন পর তিনি জানতে পারেন তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নিজের হাজিরা খাতার অনুলিপি নিয়ে রোববার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. বেলাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) বেলাল হোসেন বলেন, ডা. শারমিন তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাকে নিজের বক্তব্য লিখিতভাবে স্বাস্থ্যসচিবকে জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনার কথা তিনি জানাতে পারেননি। তবে বলেছেন, হাসপাতাল থেকে তাদের বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছিল। তদন্ত হবে, নির্দোষ প্রমাণিত হলে তারা নির্দোষ।

গতকাল শনিবার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দিতে অনিচ্ছা প্রকাশের অভিযোগ এনে মোট ছয় চিকিৎসকের সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করেন তত্ত্বাবধায়ক সেহাব উদ্দিন। একই দিন সন্ধ্যায় ডা. মুহাম্মদ ফজলুল হক ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা) শারমিন হোসেনসহ বাকিদের সাময়িক বরখাস্তের ঘোষণা দেয়। যদিও এই দুই চিকিৎসক বাদে আরও যে চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদের একজন আগেই ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। অন্য তিনজন হাসপাতালে আসছিলেন না।

Comment here