খাটিয়া দিলো না গ্রামবাসী, মরদেহ মাটিতে রেখে জানাজা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

খাটিয়া দিলো না গ্রামবাসী, মরদেহ মাটিতে রেখে জানাজা

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার উপনর্গে মারা যাওয়ায় মসজিদের খাটিয়া দেয়নি গ্রামবাসী, তাই মাটিতেই মরদেহ রেখেই পড়ানো হয়েছে জানাজা। গতকাল রোববার ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের খাঞ্জাপুর গ্রামে।

গত শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের শ্বাসকষ্ট, জ্বর, ঠান্ডা ও কাশিতে ভুগতে থাকা এক বৃদ্ধকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা। এখানে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করার পর গতকাল রোববার সকালে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

করোনার উপসর্গে মারা যাওয়া এ বৃদ্ধের মৃদাফনের ব্যবস্থা করেন কালীগঞ্জ উপজেলার ছয় আলেম। হাসপাতাল থেকেই মৃতদেহের গোসল করান তারা। এরপর তাদের মাধ্যমে একটি সিএনজিতে মৃতদেহটি নিয়ে যাওয়া হয় মরহুমের বাড়ি খাঞ্জাপুর গ্রামে। সেখানে জানাজা পড়ানোর জন্য আলেমদের পক্ষ থেকে গ্রামের মসজিদের খাটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীরা খাটিয়া দিতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মৃতদেহ মাটিতে রেখেই জানাজা সম্পন্ন করেন তারা। আর গ্রামবাসী দূরে দাঁড়িয়ে দাফনের কাজ দেখেন।

খাঞ্জাপুর গ্রামের এ বৃদ্ধের মৃতদেহ দাফন করেন কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ঈমাম ফারুক নোমানী, মাওলানা রুহুল আমিন, হাফেজ হেদায়াতুল্লাহ, মাওলানা ইয়াসিন, মাওলানা আতাউর রহমান ও হাফেজ শাহ জালাল।

এ ছয় আলেমের মধ্যে জানাজার নামাজ পড়ান ফারুক নোমানী। তিনি জানান, জানাজার নামাজ পড়ানোর জন্য গ্রামবাসীর কাছে মসজিদের খাটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসী সেটি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে মরদেহ মাটিতে রেখেই জানাজার নামাজ সম্পন্ন করে লাশ দাফন করা হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন বলেন, ‘চারদিন ধরে ওই ব্যক্তির জ্বর ছিল। তার ঠান্ডা-কাশি এবং গলাব্যথাও ছিল। আমাদের সঙ্গে আগে থেকে তিনি কোনো প্রকার যোগাযোগ করেননি। গত দুই দিন ধরে তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। শনিবার রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে আনার পথে তিনি মারা যান।’

তিনি জানান, মারা যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি। এরপর পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে রোববার সকালে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃতদেহ দাফন ও কাফনের জন্য ছয় জনের একটি টিম কাজ করেছে।

Comment here