কারাগারে ফখরুল-আব্বাস - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

কারাগারে ফখরুল-আব্বাস

আদালত প্রতিবেদক : রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ আদেশ দেন।

এ ছাড়াও রিমান্ড শেষে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সহসভাপতি নুরুল ইসলাম নয়নসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিন বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ফখরুল ও আব্বাসকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর তরিকুল ইসলাম। রিমান্ড আবেদন না থাকায় তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রেখেই শুনানি হয়।

কারাগারে আটক রাখার আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেআইনিভাবে হাঙ্গামা করে বাঁশের লাঠি নিয়ে সজ্জিত হয়ে পুলিশকে আক্রমণ ও বলপ্রয়োগ করে গুরুতর জখম করে। জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ ব্যক্তি বা জনগণের সম্পত্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় উপ-পুলিশ কমিশনার মতিঝিল বিভাগ ও অতিরিক্ত কমিশনার মতিঝিল জোনসহ অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধন হয়। মামলাটি তদন্তকালে মির্জা ফখরুল ও আব্বাস ওই ঘটনার পরিকল্পনাকারী, উসকানিদাতা এবং নির্দেশদাতা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাই মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।

আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক ফারুকী, সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শুনানিকালে মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম ও তার মেয়ে মির্জা সাফারুহ সুমি এবং মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত জামিন নামঞ্জুর আদেশ দেওয়ার পর তাদের পক্ষে আইনজীবীরা কারাগারে ডিভিশনের প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশনের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে ফখরুল ও আব্বাসকে আদালতে আনার পর বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল করতে শুরু করলে তৎক্ষণাৎ আদালত চত্বর জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকায় দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।

উল্লেখ্য, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত রাত তিনটার দিকে পুলিশ আটক করেছে বলে দলের একজন নেতা জানান। এরপর আজ দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার দেখায় ডিবি পুলিশ।

এদিকে পল্টন থানার নাশকতায় মামলায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সহসভাপতি নুরুল ইসলাম নয়নসহ ৭ জনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিজন কুমার বিশ্বাস চারদিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

কারাগারে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন- মোকলেছ মিয়া, মোশারফ হোসেন খোকন, জজ মিয়া, ফরিদ উদ্দিন রানা ও আব্দুল্লাহ।
গত ৪ ডিসেম্বর আসামিদের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলা থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ মে রাজধানীর পল্টন থানাধীন এলাকায় আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বেআইনিভাবে মশাল মিছিল বের করে দাঙ্গা হাঙ্গামা করে। সরকার বিরোধী বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য ও গাড়ি ভাঙচুরসহ পুলিশকে আক্রমণ করে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় পল্টন থানার এসআই মো. কামরুল হাসান মামলাটি দায়ের করেন।

মামলাটিতে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ৩০ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়। এ ছাড়াও মামলায় একশ‘ থেকে দেড়শ‘জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষে ফেরার পথে ৩ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে রাজধানীর আমিনবাজার থেকে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও নুরুল ইসলাম নয়নকে আটক করা হয়।

 

Comment here