কুড়িগ্রামের উলিপুরের শিকল অবরুদ্ধ শিশু হাবিবুরের করুন কাহিনী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

কুড়িগ্রামের উলিপুরের শিকল অবরুদ্ধ শিশু হাবিবুরের করুন কাহিনী

সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :পৃথিবীতে প্রতিটি সন্তানের জন্মই আনন্দের।কিন্তু জন্মই যেন আজন্ম পাপ কথাটির মূর্ত প্রতীক যেন  হাবিবুর(৯)। তার যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা,সহপাঠীদের সাথে পাঠশালায় যাওয়ার কথা,মুক্ত মনে ছোটা ছুটি করে খেলা করার কথা, ঠিক সেই বয়সেই শিকলে বন্দী জীবন কাটাচ্ছে হাবিবুর। জন্মের পর বাবা-মায়ের কোলে বড় হওয়ার কথা থাকলেও এটাই এখন হাবিবুরের জীবনের নির্মম বাস্তবতা। হাবিবুর কুড়িগ্রাম উলিপুরের ধামশ্রণি  পোদ্দার পাড়া এলাকার মো. আবুরুদ্দির ছেলে ।

সরেজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ীর উঠানে গাছের সাথে শিকল বন্দী মাটিতে বসা হাবিবুর।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে হাবিবুরে  জন্ম।৩ ভাই বোনের মধ্যে হাবিবুর ২য় বড় বোনের বিয়ে হয়েছে ছোট বোন নানীর কাছে লালন পালন হচ্ছে। প্রায় বছর ২ হলো তার মা মারা যাওয়ার।মা হারিয়ে শিশু হাবিবুরের জীবন যেন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছে কোন সন্তানাদি নেই। জন্মের পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে শিশু হাবিবুর। তার বাবা মো.আবুরুদ্দি একজন দিনমজুর।ভিটামাটি ছাড়া কিছুই নাই তার।কাজ না করলে পেটে ভাত জোটেনা ।এই কষ্টে শিশু হাবিবুরের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা কোন ভাবেই সম্ভব নয় তার পক্ষে।

হাবিবুরের বাবা আবেগ ভরা কন্ঠে চোখের জল নিয়ে জানান, আমার ছেলে জন্মের পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। প্রাথমিক চিকিৎসা করা হলে কিছুদিন সুস্থ থাকার পর আবার আগের মতো অসুস্থ হয়ে পরে সে। অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারিনি। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার পর থেকে গত কয়েক বছর এলাকাবাসীর বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি করে।এলাকাবাসীর অভিযোগের শেষ নেই।সে জন্য ছেলেকে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।দিনমজুরের কাজ করে যে টাকা উর্পাজন করি, ওই টাকায় সংসারে খরচ করি।শত কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলছে আমাদের জীবন সংসার। টাকা পয়সা না থাকার কারণে ছেলের চিকিৎসা করাতে না পেরে ছেলেকে শিকলে বেঁধে রাখতে হচ্ছে। আমি বাবা হয়ে ছেলের কষ্ট সইতে পারছি না আর। সমাজের বিত্তবানদের কাছে ছেলের চিকিৎসা করাতে আকুল আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

শিকল অবরুদ্ধ শিশুটির চিকিৎসা করাতে পারলে সে সুস্থ হয়ে উঠতো।স্বাভাবিক আট দশ জন শিশুর মত হেঁসে খেলে সহপাঠীদের সাথে বিদ্যালয়ে যেতে পারতো। কিন্তু দিনমজুর বাবার পক্ষে তার ছেলের চিকিৎসা করানো কোন ভাবেই সম্ভব নয়।সমাজের বিত্তোবানদের সহযোগীতা চান অসহায় দিনমজুর বাবা।

Comment here