নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ শক্তি বাড়িয়ে ‘অতি প্রবল’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি ধেয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে এটি খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, অতি প্রবল এ ঘূর্ণিঝড় আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ আজ সারাদিন সমুদ্রেই প্রচুর শক্তি অর্জন করবে। এর মাধ্যমে এটি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হবে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, সুপার সাইক্লোনে রূপ নিলে এই ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ২২০ থেকে ২৬৫ কিলোমিটার। তবে উপকূলের কাছাকাছি আসতে আসতে এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তখন বাতাসের এই গতিবেগ কিছুটা কমে যেতে পারে।
আজ সকাল ৬টায় ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার বেগে উত্তর দিকে এগিয়ে এসে ‘আম্ফান’ অবস্থান করছিল পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায়। সে সময় এ ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
Comment here