নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্রসফায়ার শব্দের সঙ্গে একমত নন পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। শব্দটি এনজিওরা বলে; মন্তব্য করেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার কক্সবাজারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন আইজিপি।
আজ জেলার টেকনাফ উপজেলায় পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার বিষয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। সেখানে এ মন্তব্য করেন বেনজীর।
আইজিপি বলেন, ‘ক্রসফায়ার শব্দের সঙ্গে আমরা একমত নই। এটি এনজিওরা বলে। এটি আমাদের এখানে যারা এনজিওগিরি করেন, তারা বিভিন্ন কারণে বিদেশ থেকে পয়সা আনেন। ঝকঝকে গাড়িতে চড়েন, ঝকঝকে অফিসে বসেন। জাস্টিফাই করতে হলে অনেক রকম কথা বলতে হয়। তার মধ্যে ক্রসফায়ার হলো একটি।’
এ সময় সেনাবাহিনীর সঙ্গে পুলিশের সম্পর্কে চিড় ধরবে না মন্তব্য করে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সেনাবহিনী এবং পুলিশের মধ্যে প্রায় ৫০ বছরের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই দুই বাহিনীর মধ্যে পরস্পর আস্থা, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক রয়েছে। এই ঘটনায় কোনোভাবেই এর অবনতি ঘটবে না। আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দিচ্ছি, সরকার যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তারা সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত হয়ে তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে। এই ঘটনায় কোনো কোনো মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে, তারা সফল হবে না।’
বাংলাদেশ আধুনিক গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে আইনের শাসন আছে মন্তব্য করে পুলিশের মহাপরিদর্শক আরও বলেন, ‘যদি আরও কেউ মামলা করতে চায়, নাগরিক হিসেবে তার আইনগত সেই অধিকার রয়েছে। মামলা করার ক্ষেত্রে যদি কেউ নিরাপত্তার সংকট অনুভব করেন, তাহলে মামলা সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।’
কক্সবাজারের সেনাবাহিনীর বাংলো জলতরঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের নিহত হওয়ার ঘটনাকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে, অবশ্যই সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী মর্মাহত। আমি আপনাদের মাধ্যমে যে মেসেজ (বার্তা) দিতে চাই, তা হলো; এটাকে আমরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি জয়েন্ট ইনকোয়ারি টিম (যৌথ তদন্ত দল) গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মাকে ফোন করে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। তার কথার ওপর সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর আস্থা আছে। যে যৌথ তদন্ত দল গঠিত রয়েছে, তার ওপরও দুটি বাহিনীই আস্থাশীল।’
সেনা প্রধান আরও বলেন, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, দুই বাহিনীর সম্পর্কে চিড় ধরে—এমন কিছু হবে না। এ ঘটনা নিয়ে যেন সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভেতর অনাকাঙ্ক্ষিত চিড় ধরানোর মতো ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’
Comment here