খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে সরকার: মির্জা ফখরুল - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে সরকার: মির্জা ফখরুল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে না দিয়ে ‘সরকার মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রবিবার সকালে বগুড়া হাটখোলা মাঠে ‘তারুণ্যের রোড মার্চ’ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এই অভিযোগ করে তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘দেশের জনপ্রিয় নেত্রী যিনি, গণতন্ত্রের জন্য সারাটা জীবন সংগ্রাম করছেন সেই নেত্রীকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে তাকে হাসপাতালে আজকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে হচ্ছে। তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। চিকিৎসকরা বলেছেন, তাকে বাঁচাতে হলে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা দরকার, সেটা বিদেশ ছাড়া সম্ভব নয়। পরিবার থেকে বলা হয়েছে, আমরা বলেছি, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) শুনতে রাজী নন।’

তিনি বলেন, ‘সাঈদী সাহেবকে কীভাবে জেলে ঢুকিয়ে হাসপাতালে মেরে ফেলেছে; মেরে ফেলেছে না?’ সমস্বরে নেতাকর্মীরা বলে উঠেন হ্যাঁ।

এ সময় মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘উদ্দেশ্য ওইটা-ই। অবিলম্বে দেশনেত্রীকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তা না হলে সব দায়-দায়িত্ব আপনাকে বহন করতে হবে।’

দেশী-বিদেশী সবাই বিশ্বাস করে ২০১৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচন হয়নি বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ভোট চুরি করে জোর করে এই সরকার ক্ষমতায় আছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এবার যাতে বিরোধী দল নির্বাচনে আসতে না পারে এ জন্য মিথ্যা, গায়েবি মামলায় দিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া শুরু করেছে। তবে, এবার তারা এক তরফা নির্বাচন করতে পারবে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি, শুধু ভোটাধিকার ফিরিয়ে দাও, আর শেখ হাসিনা তুমি পদত্যাগ কর। তুমি-ই সরকারে থাকবে, সেই নির্বাচন কোনো দিন সুষ্ঠু হবে না। সংসদ বিলুপ্ত কর আর নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা কর।’

এ সময় নিজেই স্লোগাণ ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এক দফা এক দাবি, (নেতাকর্মীরা বলেন) শেখ হাসিনা তুই কবে যাবি। দফা এক দাবি এক, (নেতাকর্মীরা বলেন) শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এই লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে চলছি। আজ দেশের সকল রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। আসুন, এই সরকারকে সরিয়ে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। জেগে উঠুন, পরাজিত করুন এই দানব সরকারকে।’

ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমদু চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন ফয়সালা রাজপথে হবে। বক্তব্য দিয়ে সময় নষ্ট করা যাবে না। রাস্তায় থাকতে হবে, রাস্তায় থেকে এদের বিদায় করতে হবে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আবার ভোটচুরির পাঁয়তারা করছে। এই ভোট চোরদের মধ্যে আছে, আওয়ামী লীগের দুর্বিত্তরা, প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তারা, আওয়ামী লীগের দলীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন, লুটেরা ব্যবসায়ীরা, বিচার বিভাগের একটি অংশ- এদের কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। এদের ওপর চোখ রাখুন। এই ভোট চোরদের তালিকা করুন, প্রত্যেক জেলায় জেলায় তালিকা করুন। এই ভোট চোররা শুধুমাত্র আমেরিকার ভিসা থেকে বাতিল হবে না, দেশের জনগণের ভিসা থেকেও বাতিল হয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ভোটচোরদের তালিকা করেন, তাদের কারা কারা বিদেশে থাকে তাদের তালিকা করেন। সম্পত্তির তালিকা করেন, তাদের কার কাছে কয়টা অস্ত্র আছে তার তালিকা করেন। আগামী দিনে জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।’ জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন আমির খসরু।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস দুলু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, বগুড়া জেলা বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

বগুড়ায় পথসভা শেষে তারুণ্যের রোডমার্চ নওগাঁ হয়ে ১২৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এই রোডমার্চেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোডমার্চে নাটোর, জয়পুরহাট ও চাঁপাই নবাবগঞ্জের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী মোটর সাইকেল, মাইক্রোবাস এবং পিকআপ নিয়ে অংশ নেন। এছাড়া সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার নেতাকর্মীরাও এই রোডমার্চে অংশ নিয়েছেন।

ভোটাধিকারের এক দফ দাবিতে গতকাল শনিবার রংপুর বিভাগ থেকে রোডমার্চ শুরু করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

Comment here