নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এলডিপির (একাংশের) জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের মা দাবি করে অনুষ্ঠানে টুকু বলেন, ‘হিটলার যেমন তার দেশের গণতান্ত্রিক মানুষদের কনস্ট্রেশন ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করত, তেমনি আজকে পিজি (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালকে কনস্ট্রেশন ক্যাম্প বানিয়ে খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘গত ১০ বছর বিএনপির ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তা ওই হিটলারের সাথে তুলনা করা যায়। ইহুদীদের হিটলার যে নির্যাতন করেছিল তার চেয়েও এখন আমাদের খারাপ অবস্থা। আমরা এখন জামিনে আছি, হয়তো এখনো ধরে নিয়ে যেতে পারে। সেই অবস্থায় বিএনপি এখনো দল হিসেবে টিকে আছে। বিএনপি সুযোগ পেলে মৌমাছির মতো বেড়িয়ে পড়ে, এটাই হলো বিএনপির বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।’
ইকবাল হাসান টুকু আরও বলেন, ‘আমাকে প্রায়ই সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেন ২০১৯ সাল চলে গেল, আপনারা ঘুরে দাঁড়াতে পারলেন না। আমি সাংবাদিক ভাইদের বলতে চাই আপনারাও তো ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। আপনারা কেন লিখতে পারেন না? আপনারা টিভিতে কেন প্রচার করতে পারেন না। সেটা আগে বলেন।’
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনারাই বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয় পেয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, কত ভয়ে আপনারা থাকেন, যে সত্যটাকে সত্য বলতে পারেন না। ২৯ ডিসেম্বর রাতে কীভাবে সারা দেশে কারফিউ দিয়ে ভোট কেটে নিল সে কথাটা বলার কোনো সাহস কোনো টেলিভিশন কেন্দ্রের নাই।’
অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদেরে বক্তব্যের সমালোচনা করে টুকু আরও বলেন, ‘৬০ এর দশকে আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করেছি। ওবায়দুল কাদের কী ছিল তা আমরা জানি। তিনি সারাক্ষণ বলেন, “বিএনপি নাই বিএনপি নাই, বিএনপি ১০ পার্সেন্ট।” তো বিএনপি যদি নাই থাকে তাহলে বিএনপির জন্য যে এনার্জি ক্ষয় করে ওই এনার্জিটা; ওই যে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, “এলাকায় গিয়ে গাড়ির গ্লাস খুলতে পারেন না।” সেইখানে গিয়ে কাজে লাগায় না কেন? খামাখা এই বিএনপির পেছনে সময় নষ্ট করে লাভ কী।’
খালেদা জিয়াকে ভয় পেয়ে তার লাশ ছাড়া বের করতে চায় না (সরকারের উদ্দেশে) উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকলে অনেক ভালো লাগে। কিন্তু ক্ষমতা যখন চলে যায় তখন পালাবার রাস্তা থাকে না।’
দলীয় ও জোটের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, ‘এই হলের মধ্যে বসে থাকলে হবে না। খালেদা জিয়াকে মুক্তি করতে হলে, তারেক রহমানকে ফেরত আনতে হলে প্রথমে গণতন্ত্র প্রয়োজন। একমাত্র বুকের তাজা রক্ত ঢালতে পারলেই গণতন্ত্র আসবে, না হলে আসবে না।’
লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশের সভাপতি আব্দুল করিম আব্বাসীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সেলিমের সঞ্চালনায় জাতীয় কাউন্সিলে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাগপার একাংশের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, এলডিপি নেতা আব্দুল গনি, এম এ বাশার, ইব্রাহিম রওনক, কাজী মতিউর রহমান মিলন প্রমুখ।
Comment here