গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের যে নির্দেশনা দিলেন খালেদা জিয়া - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের যে নির্দেশনা দিলেন খালেদা জিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে দেখা করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় শীর্ষ নেতা।গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তারা খালেদা জিয়ার কেবিনে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে গত ৯ আগস্ট থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন খালেদা জিয়া।

বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার এবং দেশ বাঁচাতে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের মধ্যে ছিলেন- জেএসডি সভাপতি আ স ম রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা চিকিৎসকদের কাছ থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং খালেদা জিয়ার সঙ্গে ৫ মিনিটের মতো কথা বলেন।

পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, ‘উনি ওই রকম কোনো অবস্থায় নেই যে, রাজনীতি নিয়ে কথা বলবেন। আমরা বাইরের সার্বিক অবস্থা বলেছি, আমরা যে এক দফার আন্দোলন করছি এবং সামনের মাস থেকে আরও শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করব। উনি বলেছেন, আপনারা বাইরে যারা যারা আছেন, সবাই মিলে করেন আপনাদের দেখতে চাই আপনারা আন্দোলন করছেন, এই আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের প্রতি তার সমর্থন আছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমন্বয়কারী বলেছিলেন, ‘এখন সরকার একটি নির্বাচনী জাল বিছানোর চেষ্টা করেছে-যাতে এই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারে। আমাদের এই নির্বাচনে পা দেওয়া চলবে না। এটাকে উনি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে বলেছেন কোনো অবস্থাতেই এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করা যাবে না-এ কথা তিনি বলেছেন। ’

হাসনাত কাইয়ুম বলেছেন, ‘উনি আরেকটা কথা বলেছেন, দেশকে রক্ষা করার জন্য আন্দোলনটা লাগবে। দেশকে বাঁচালে হলে এই আন্দোলনে বিজয়ই হতে হবে-এর বিকল্প নেই। ’

শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘আপনারা জানেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ। এবার এক মাসের বেশি সময় ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তার অবস্থা বর্ণনা করা যাবে না, খুবই সঙ্কটাপন্ন। ওনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে-এর কোনো বিকল্প নেই বলে চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন। এজন্য তাকে বিদেশে নিতেই হবে। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতৃবৃন্দ তাকে দেখতে এসেছিলাম। আমরা চিকিৎসক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা তাতে যা বুঝতে পেরেছি, তার নাগরিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারের জন্য তাকে অবিলম্বে বিদেশে চিকিৎসা করার জন্য সরকারের কাছে জোর আহ্বান জানাচ্ছি। ’

জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘আমাদের নেতৃবৃন্দ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তাকে (খালেদা জিয়া) কিছুটা জানিয়েছেন। তিনি যেটা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করতে হবে এবং দেশটাকে বাঁচাতে হবে। আমরা জানিয়েছি যে, আমরা ভোটের অধিকারের জন্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের পুরো শাসন ব্যবস্থা বদলে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ করার জন্য একটি অন্তবর্তী সরকারের জন্য লড়াই করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘উনার যে শারীরিক জটিলতা আছে বিশেষ করে লিভার ও অন্যান্য বিষয়- বাংলাদেশে যত রকমের চিকিৎসা সেবা আছে, তা তিনি পাচ্ছেন। লিভারের যে অবস্থা এটা থেকে যদি নিরাময় করতে হয়, তাহলে ওনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বাংলাদেশে তা সম্ভব নয়, উনাকে বাঁচিয়ে রাখতে বিদেশে চিকিৎসা অত্যাবশকীয় বিষয়। কারাবন্দী থাকলেও চিকিৎসা পাওয়াটা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। আইনের কোথাও লেখা নেই উনি বিদেশে যেতে পারবেন না।’

কারাবন্দী অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার উদাহরণ আছে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘খোদ জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব কারাবন্দী অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসা পেয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া সিনিয়র নাগরিক, দেশের কয়েকবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন, নাগরিক হিসেবে তো বটেই সব অর্থেই তার চিকিৎসা পাওয়া মানবাধিকারের মধ্যে পড়ে।’

Comment here