গুগল-ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানি থেকে ভ্যাট নিতে ৫ নির্দেশ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

গুগল-ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানি থেকে ভ্যাট নিতে ৫ নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকি রোধ ও তা আদায়ের ব্যাপারে হাইকোর্ট পাঁচদফা নির্দেশনা দিয়েছেন। ইন্টারনেটভিত্তিক এসব প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকি রোধ করতে জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে আজ রোববার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

পাঁচ দফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-

১. অনতিবিলম্বে সকল ইন্টারনেট কোম্পানি যেমন গুগল-ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন কোম্পানিগুলিকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সকল প্রকার ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে উক্ত আদেশ প্রদান করা হয়েছে।

 

২. ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিগত পাঁচ বছরে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আনুপাতিক হারে বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে হবে।

৩. উক্ত রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর হলফনামা আকারে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবে।

৪. এ রায়টি একটি চলমান আদেশ বা ‘কন্টিনিউয়াস ম্যানডেমাস’ হিসেবে বলবৎ থাকবে।

৫. এ রায়ের বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক যেকোনো সময় আদালতে আবেদন দাখিল করে প্রতিকার চাইতে পারবেন।

২০১৮ সালে একটি পত্রিকার প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এবং সারা বিশ্বে গুগল-ফেসবুক কর্তৃক ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. হুমায়ন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার মো. সাজ্জাদুল ইসলামসহ ছয়জন আইনজীবী জনস্বার্থে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন।

রিট আবেদনে অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আইন সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, তথ্য সচিব, বাংলাদেশ নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট, গুগুল, ফেসবুক, ইয়াহু কোম্পানিগুলোকে বিবাদী করা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে শুনানিতে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মো. মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক ও ব্যারিস্টার সাজ্জাদুল ইসলাম।

রায়ের পর আইনজীবী পল্লব বলেন, ‘রায় ঘোষণা করার সময় আদালত সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জনস্বার্থে আমাদের দায়েরকৃত রিট পিটিশনের আদেশের পর দীর্ঘ আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও সরকারি দপ্তরগুলো তেমন কোনো সাফল্যজনক রাজস্ব আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছেন। দীর্ঘ আড়াই বছরেও ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো থেকে রাজস্ব আদায়ে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই রায়টি বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করা সম্ভব। কারণ প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা এই কোম্পানিগুলিকে বাংলাদেশ থেকে পরিশোধ করা হয়ে থাকে।’

 

Comment here